চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী দাবী করেছেন মনজুর আলম আওয়ামীলীগে আছেন। আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি আওয়ামীলীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। আর আমাকে দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করিয়েছেন এটাই বড় প্রমান তিনি আওয়ামী লীগে আছেন।
শনিবার নগরীর উত্তর কাট্টলীতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গুনিজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন এসব কথা বলেন।
মোস্তফা হাকিম বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, তিনি নির্বাচনে আমাকে পরাজিত করেছেন বলে আওয়ামীলীগের পদে থাকতে পারবনে না একথা ঠিক না। দলে কেউ আসতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া যাবেনা। বরং উৎসাহিত করতে হবে।
সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ফাউন্ডেশনের সকল কাজ মনজুর আলম করে যাচ্ছেন। আমি তাঁকে সহযোগিতা করছি মাত্র। যে কাজ আমি করতে পারিনি তা মনজুর করছেন। তিনি আমাদের দলে ছিলেন এবং এখনো আছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব সাবেক মেয়র মো. মনজুর আলম।
এসময় বলেন, আমি মহিউদ্দিন চৌধুরীর কারনে মেয়র হতে পেরেছি। মেয়র থাকাকালীন মহিউদ্দিন চৌধুরী আমাকে তিনবার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ১৭ বছরের সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর থাকা অবস্থয় তিনবার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হতে পেরে কাজ শিখেছেন বলে উল্লেখ করেন মনজুর আলম।
সাবেক মেয়র মনজুর আলম বলেন, মেয়র থাকাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন উন্নয়ন কাজের জন্য। প্রধামন্ত্রী বলেছিলেন মনজুরকে কাজ করতে দিন তিনি নিজেদের লোক এবং কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। সমাজের সার্বিক উন্নয়নে অতীতের মত আগামীতেও আমি কাজ করে যাবো ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যে ৪৪ জনকে সংবর্ধিত করা হয় তাঁরা সবাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত।
বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্র দখল ও ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার পাশাপাশি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মনজুর আলম। বলেছিলেন আর রাজনীতি করবেন না আগের মত সমাজ সেবা করে যাবেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। ২০১০ সালে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। মনোনয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়া মনজুর আলমকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা করা হলেও সর্বশেষ নতুন কমিটিতে তাঁর স্থান হয়নি দলে।
এরপর বিভিন্ন সময় গুঞ্জন উঠে তিনি আওয়ামীলীগে যোগ দিচ্ছেন। নির্বাচন পরবর্তী মনজুর আলমের গুরু হিসেবে পরিচিত মহিউদ্দিন চৌধুরী একাধিকবার মনজুর আলমের বাসায় যান। সে সময় তাঁদের দুজনের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে একান্ত বৈঠক নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয় নগরীতে।
সর্বশেষ গেল রমজান মাসে মনজুর আলমের পিতা আবদুল হাকিম কন্ট্রাক্টরের মৃত্যু বার্ষিকী অনুষ্ঠানে পূনরায় মনজুর আলমকে আওয়ামীলীগে চলে আসার আহবান জানান মহিউদ্দিন চৌধুরী। তখন মনজুর আলম বলেছিলেন আমি আপনার (মহিউদ্দিন চৌধুরীর) সাথে আছি। নির্বাচনের পর প্রায় এক বছর পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শোক দিবস পালন করেন। ওইদিন সাবেক এ মেয়রের এক নাতিকে আহ্বায়ক করে বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেলের নামে একটি সংগঠন আত্ম প্রকাাশ করে।
এসময় তিনি বলেছিলেন তিনি বঙ্গবন্ধুর আর্দশের ছায়াতলে ছিলেন আছেন এবং থাকবেন। এ ছাড়া তাঁর পরিবারের সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী বলেও তিনি গনমাধ্যমে দেয়া বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর শোক দিবস পালনের বিষয়ে তখন মনজুর আলম বলেছিলেন, ফোর্থ জেনারেশন পর্যন্ত সবাই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী।
শনিবারের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন, সীতাকুন্ড পৌর মেয়র বদিউল আলম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ছাবেরী,আকবর শাহ থানা আ’লীগ সভাপতি সোলতান আহমদ চেয়ারম্যান, সেক্রেটারী কাজী আলতাফ, সীতাকুন্ড থানা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইছহাক, আ’লীগ নেতা রেহান উদ্দিন রেহান, জুলফিকার আলী মাসুদ শামীম,ই ঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান ।