ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সুবিধা বঞ্চিত কক্সবাজারের জেলেরা ইলিশ শিকারে বাধ্য হচ্ছে

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

b2
.

ইলিশের প্রজনন মৌসুমের (১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত) ২২ দিন সরাদেশে ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার প্রান্তিক জেলেরদের জন্য চাল বিতরণসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসলেও কক্সবাজার টেকনাফে প্রকৃত জেলে সম্প্রদায় সরকারী এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা ইলিশ ধরা অব্যাহত রেখেছে।

প্রজনন মৌসুমে সরকার জেলেদের সাগরে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখার জন্য প্রতি জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে জেলেদের অভিযোগ, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা এবং কিছু দালাল চক্র প্রকৃত জেলেদের নাম নিবন্ধন না করে ২-৩ শত টাকার বিনিময়ে জেলে কার্ড তাদের আত্মীয়-স্বজনদের দিছেন। ১৭ অক্টোবর সোমবার সকাল থেকে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জেলেদের ছবি তোলার কার্যক্রম চলে।

.

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, জেলেদের কার্ডের জন্য ছবি তোলার সময় প্রত্যেক জেলের কাছ থেকে ২’শ টাকা হারে নিয়েছে আনোয়ার নামের এক যুবক। এ আনোয়ার কে টাকা দিলেওই জেলের তালিকাভুক্তি হতে পেরেছে। আনোয়ার নামের যুবক নিজেকে কখনো সংবাদ কর্মী, আবার কখনো রাজনৈতিক কর্মী পরিচয় দিয়ে জেলেদেও কাছ থেকে টাকা আদায় করায় সরকারী মহৎ উদযোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। কার্ডের ছবি তোলার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ জেলেদের ফরম বিতরণ করেছে। আবার অনেক জেলে ফরম না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া জেলে নয় এমন অনেকে ফরম পেয়েছে বলেও সুত্র জানায়।

জেলেদের কার্ডের জন্য ছবি তোলার সময় প্রত্যেক জেলের কাছ থেকে ২’শ টাকা হারে নিয়েছে আনোয়ার নামের এক যুবক।

এখন নিষিদ্ধ সময়ে প্রকৃত জেলেরা সরকারি সহায়তা না পেয়ে বাধ্য হয়ে সাগরে মাছ শিকার করতে যাচ্ছেন। আবার এ সময়ে জেলেদের পুনর্বাসনে সরকারিভাবে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হলেও মহাজন ও এনজিওর ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাধ্য হয়ে সাগরে মাছ শিকারে নামছে জেলেরা। জেলেদের দাবি, এ সময় সরকার যে চাল দেয় তা পাওয়া নিয়েও শঙ্কিত তারা।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বাহারছড়া ইউনিয়নে নিবন্ধিত পুরাতন জেলের রয়েছে ৭’শ জন। এছাড়া আরো ১৫০ জন নতুন জেলের মাঝে ফরম বিতরণ ও সোমবার ছবি তোলা সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয়রা আরো জানান, প্রকৃত জেলেদের সরকারি সহায়তা দিলে ও মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের ২২ দিন ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখা হলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানতে সহজ হবে এ অঞ্চলের জেলেদের জন্য। বাস্তবায়ন হবে মা ইলিশ কর্মসূচি।

b4
.

সরেজমিনে টেকনাফ উপজেলার শামলাপুর উত্তর ও দক্ষিণ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সাগরপাড়ে এক পাশে জাল ও নৌকা তুলে রাখছেন জেলেরা। তাদের কাছে এগিয়ে গেলে ছুটে এসে শামলাপুরের কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেন, তারা দীর্ঘদিন থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে গেলে তারা সরকারি সহায়তার বিনিময়ে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে অন্য পেশার লোকদের জেলে কার্ডের জন্য ফরম বিতরণ ও নাম নিবন্ধিত করে দেয়। তাই সরকারি সহায়তা না পেয়ে নিষিদ্ধ সময়ে পেটের দায়ে সাগরে মাছ শিকার করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

শামলাপুর দক্ষিণ ঘাটের কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ি জানান, বাহারছড়া ইউনিয়নে প্রকৃত জেলেদের অনেকেই কার্ড পায়নি। এখন যারা কার্ড পেয়েছে তার মধ্যে ৮০ ভাগ অন্য পেশার, ২০ ভাগ জেলে।

বাহারছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের প্রকৃত জেলে শহীদুল্লাহ বলেন, মেম্বার কাছে গিয়ে ফরম পায়নি। তাই ছবি উঠাতে না পেওে ফিরে এসেছে। তার মতো আরো অনেক প্রকৃত জেলে রয়েছে, যারা দালাল চক্রকে টাকা দিতে না পারায় ফরম পুরণ ও ছবি তুলতে পারেনি।

নিবন্ধিত জেলে বেলাল উদ্দিন জানান, একজন জেলে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮-১০ জন। সরকারি এ ২০ কেজি চালের সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। আবার মাছ ধরা বন্ধ হলেও তারা এখনো চাল পাননি। এতে করে জেল-জরিমানা যত কিছুই হোক, পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করতে বাধ্য হয়ে সাগরে যেতে হবে।

.

এলাকার নুরুল্লাহ, শহীদুল্লাহ, ছব্বির মাঝিসহ কয়েকজন জেলে জানান, সাগরে মাছ শিকারই হচ্ছে তাদের একমাত্র পেশা। তাই জেলেরা স্থানীয় মহাজন ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া, জাল ও নৌকা তৈরি করে। নিষিদ্ধ সময়ে মাছ শিকার করতে না পারলে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়। তাই অনেকই ঋণ পরিশোধের দুশ্চিন্তায় বাধ্য হয়েই সাগরে মাছ শিকার করে।

প্রকৃত জেলে কবির আহম্মেদ ও ছৈয়দুল হক বলেন, ‘নিষিদ্ধ সময়ের আগে মাছ ধরে কিছু টাকা সঞ্চয় করলেও ৪-৫ দিন পর এই টাকা শেষ হয়ে যাবে। আমাদের কাজ মাছ ধরা। আমরা অন্য কোনো কাজ করতে পারিনা। তাই সরকারি সহায়তা না পেলে হয় আমাদের চুরি করতে হবে, না হয় নদীতে মাছ ধরতে হবে।’

বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন টাকার বিনিময়ে কার্ড দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এখানে কোন জেলের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেওয়া হয়নি। আমরা জেলেদের তালিকা অনুযায়ী নতুন ১৫০ জন জেলের ছবি তোলার পর কার্ড পৌঁছে দিব। আগামী সপ্তাহের মধ্যে কার্ড পাওয়া জেলেদের মাঝে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে।’

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print