ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

৫০ শতাংশ চাকরি চিরকালের জন্য হারিয়ে যাবে

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

প্রযুক্তির প্রসারে ২০২৮ সালের মধ্যে ৮০০ মিলিয়নের বেশি লোক চাকরি হারাবে সারাবিশ্বে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অগ্রসর প্রযুক্তির ফলে ৫০ শতাংশ চাকরি চিরকালের মতো হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অন্যদিকে নতুন ধরনের কাজের সুযোগও তৈরি হবে। চ্যালেঞ্জ হলো একেবারে হারিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে কি করে রূপান্তরিত প্রযুক্তি দিয়ে আরও বেশি লাভজনক কর্মসুযোগ সৃষ্টি করা যায়।

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভয়াবহ হুমকির মধ্যে রয়েছে ২০২৮ সালের আগেই। চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এক ধাক্কায় ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ থেকে ২ থেকে ৩ শতাংশ হবে। যা বিগত ৪০ বছরের মধ্যে সব থেকে কম। ফলে বাংলাদেশ ২০২৮ সালের আগেই চাকরি হারানোর ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে।

রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন রূপায়ন: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ শীর্ষক চূড়ান্ত উন্নয়ন দলিলে এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। মূলত ২০২১ থেকে ৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ কি উন্নয়ন করতে চাই এবং কি ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে তা তুলে ধরা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এই চূড়ান্ত দলিল প্রস্তুত করেছে। ২০২৮ সালে ৫০ শতাংশ মানুষ চাকরি হারাবে সরকার যে তথ্য বিশ্লেষণ করেছিল তা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে করোনার প্রভাবে এই সংখ্যা বাড়লে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ধস নামবে দেশে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা পরবর্তী বিশ্ব ও আগের বিশ্ব এক হবে না। লকডাউন কতদিন থাকবে কেউ জানে না। লকডাউন হঠাৎ করে উঠবে না। ভ্যাকসিন না ওঠা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব থাকবেই। ফ্যাক্টরি খুলে দিলে সামাজিক দূরত্ব রাখতে শ্রমিকের সংখ্যা কমাতে হবে। সামাজিক দূরত্ব রেখেই অনেকে কিছু কাজ চালিয়ে নেবে। সেক্ষেত্রে লোক ছাঁটাই হবে, বেকারত্বের হার বাড়বে। আগে যেখানে ১০টা টেবিল ছিল এখন ৫টা থাকবে। আগে বাসে ১০০ জন উঠত এখন ২৫ জন উঠবে। ফলে বাংলাদেশে যেটা ২০২৮ সালে ঘটতো সেটা খুবই দ্রুত ঘটবে এবং ৫০ শতাংশ মানুষ চিরকালের জন্য চাকরি হারানোর শঙ্কা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবটি হবে মূলত ডিজিটাল বিপ্লব। তখন কল কারখানাগুলোতে ব্যাপক হারে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে। শুধু কলকারখানাই নয় যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও আসবে আমূল পরিবর্তন। আগের শিল্প বিপ্লবগুলোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে মানুষ যন্ত্রকে পরিচালনা করেছে। কিন্তু চতুর্থ বিপ্লবে যন্ত্রকে উন্নত করা হয়েছে। যার ফলে যন্ত্র নিজেই নিজেকে পরিচালনা করতে পারবে। করোনা পরবর্তী বিশ্বে এটা বাড়বে। তখন বেকারত্ব সরাসরি বাড়বে। করনো পরবর্তী বিশ্ব ও আগের বিশ্ব এক হবে না। ভ্যাকসিন না আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বাড়বে। সবখানে স্পেস বেশি লাগবে, লোক ছাঁটাই বেশি হবে। ভ্যাকসিন যতো দ্রুত আবিষ্কার করা যাবে ততোই মঙ্গল।

তিনি আরও বলেন, বেকারত্বের হার বাড়বে। শিল্পখাতে ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধির হার কমবে। লকডাউনের কারণে স্বাস্থ্যখাত, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বেচাকেনা ও যানবাহন ছাড়া বাকি সব খাতেই কর্যক্রম থেমে গেছে। অনেকে আয় শুন্য হয়ে পড়েছে। এমনকি ফরমাল খাত পোশাক শিল্প অনেক নেতিচাক খবর শোনা যাচ্ছে। ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার পাচ্ছে না। পুরাতন অর্ডার বাতিল করতে হচ্ছে। ১৬ কোটির মধ্যে ৮ কোটি মানুষ সমস্যায় পড়বে। অনেকে চাকরি হারাবে স্থায়ীভাবে।

করোনা যদি দীর্ঘায়িত হয় সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি আরও কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যদি করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা চলতে থাকে তবে ২০২১ সালে ১ দশমিক ২ থেকে ২ দশমিক ২৯ প্রবৃদ্ধি হবে। ২০২২ সালে ২ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হবে। ফলে করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনীতির বিভিন্ন খাত ক্ষতবিক্ষত। সবকিছু বন্ধ থাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের পাঁচ কোটির বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। ফলে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকা লাখ লাখ নারী-পুরুষ আবারও গরীব হয়ে যেতে পারেন।

উন্নয়ন দলিলে আরও দেখা যায়, অনেক উন্নত দেশে বয়ষ্ক মানুষ বেশি হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাচ্ছিল। তখন প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে প্রযুক্তি আশির্বাদ মনে করা হয়। অটোমেশন এশিয়ার স্বল্প উন্নত দেশের জন্য হুমকি। জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমঘন কাজগুলো বাংলাদেশের মতো দেশে হারিয়ে যাবে। তাই প্রযুক্তির বিস্তারে শঙ্কিত না হয়ে লাভজনকভাবে টিকে থাকার জন্য তৎপরতা, প্রযুক্তি ও কৌশল স্থির করতে হবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শ্রমঘন কাজের ক্ষেত্রে রোবটিক্স ও অটোমেশন হুমকি সৃষ্টি করলেও নতুন নতুন প্রযুক্তি অশেষ সম্ভাবনাময় নতুন সুযোগও মেলে ধরবে। প্রবৃদ্ধিতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অবদান রাখতে পারে। উল্লেখ করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্রিক নির্ভুল কৃষির সম্ভাবনা রয়েছে ১৫ থেকে ৬০ ফলন বাড়ানোর।

তবে প্রবৃদ্ধি যদি ভালো অর্জিত হয় তবে কর্মসংস্থান বাড়বে। প্রতি বছর ২ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে শ্রমশক্তি যুক্ত হবে এবং প্রায় অর্ধ মিলিয়ন কর্মীর কর্মসংস্থান হবে বিদেশে। ২০৩০ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর যুক্ত হবে ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন। প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে বছরে প্রায় এক মিলিয়ন অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৯ সাল শেষে বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। অতিদারিদ্র্যের হার সাড়ে ১০ শতাংশ। দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫৬ লাখ। সেই হিসাবে দেশে ৩ কোটি ৪০ লাখ গরীব মানুষ আছে। তাদের মধ্যে পৌনে দুই কোটি মানুষ হতদরিদ্র। করোনার ভ্যাকসিন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব কমবে না। ফলে দারিদ্রতা বাড়বে মানুষ স্থায়ীভাবে চাকরি হারাবে।

সূত্র- বাংলা নিউজ

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print