
চট্টগ্রামের পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত জাহাজ ও নৌযান নির্মাণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড শ্রমিকদের মাঝে বকেয়া বেতনের দাবিতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
আজ শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকে শ্রমিকরা দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকদের চার মাসের বকেয়া বেতন এবং ১৭ মাস ওভারটাইম বকেয়ার দাবীতে আন্দোলন করছেন প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকরা।
আন্দোলনরত শ্রমিক ফিটার ও সেকশনে কর্মরত রাফিকুল ইসলাম, জানান, তারা প্রায় ৪০০ জন শ্রমিক ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে কর্মরত আছেন। ওই প্রতিষ্ঠানটিতে গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রয়েছে।
গত ১৭ মাসের ওভারটাইমের টাকাও বকেয়া রেখেছে। প্রতিষ্ঠানের এমডি শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে সিঙ্গাপুর চলে গেছেন। এখন আমরা অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের দেখার কেউ নেই। একমুঠোও ত্রানও পায় নি। তারা আরো জানান, ‘বেতন না পেয়ে এ করোনার দূর্যোগ সময়ে এখন পরিবার পরিজন নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।’
ওই প্রতিষ্ঠানটির মেকানিক্যাল লজিস্টিক সেকশনে কমর্রত ঝুলন বড়ুয়া নামের আরেক শ্রমিক জানান, ‘গত চার মাসের বেতন ও ১৭ মাসের ওভারটাইম বকেয়া রেখে এমডি গোপনভাবে সিংগাপুর চলে গেছে। করোনার এ দূর্যোগকালে তিনি আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে কিভাবে দেশের বাইরে পাড়ি জমালেন। ভাবতে অবাক লাগছে। উনার কি কোন মানবতা নেই। আমরা এখন কার থেকে বেতন পাব তাও বুঝতেছি না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
পেইন্টার সেকশনে কর্মরত অপর শ্রমিক আবু বশির জানিয়েছেন, ‘তারা শান্তিপূর্ণভাবে এক সপ্তাহ ধরে কারখানার ভেতরে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু কোনো রকম সুরাহা না হওয়ায় আজ তারা প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকের সামনে নেমে আসেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে থাকেন।’
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের ব্যক্তিগত নাম্বারে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর পরও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসানের ব্যক্তিগত নাম্বারে কল দিলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা জানান, ‘আমি খবর পাওয়ার সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায় নি। আন্দোলরত শ্রমিকদের তালিকা করে তাদের জন্য সরকারী ত্রান তহবিল থেকে জরুরী সকল ধরনের খাদ্য সহায়তা পৌছিয়ে দিচ্ছি।’