
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে অগ্নি নিরাপত্তা কিংবা দুর্ঘটনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ছাড়াই গড়ে উঠছে শত শত বহুতল ভবন। আইন থাকা সত্তেও ভবন তৈরির আগে ফায়ার সার্ভিস থেকে নেয়া হচ্ছেনা অনাপত্তি পত্র। ঠিক তেমনি ভবন তৈরির পর নেয়া হয় না বসবাসের উপযোগী ঘোষিত ছাড়পত্র। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এবং ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা।
এ অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তি পত্র ছাড়া ভবনগুলোতে বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাস সংযোগ না দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে সি ডি এ।

ফায়ার সার্ভিস আইন ২০০৩ সালের ৭ এবং ৮ ধারা অনুযায়ী, ছয় তলার ওপর যে কোনো ভবন নির্মাণ করতে গেলে ফায়ার সার্ভিস থেকে অনাপত্তি পত্র এবং ভবনের নির্মাণের কাজ শেষ হলে বসবাস উপযোগী ঘোষিত ছাড়পত্র নিতে হবে। অনাপত্তি পত্রে অগ্নি নিরাপত্তা এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১৮টি শর্ত দেয়া হয়। ভবন তৈরি শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক দল শর্তগুলো মানা হয়েছে কি না পরীক্ষা শেষে বসবাস উপযোগী ছাড়পত্র দিয়ে থাকে। কিন্তু নগরীতে পাঁচ হাজারের বেশি বহুতল ভবন থাকলেও মাত্র ৩’শটি ভবন অনাপত্তি নেয়।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন দুই থেকে তিন ভাগ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কার্যকর করতে পেরেছে। এখনো পুরোপুরি করতে না পারার কারণে ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে যারা এই ভবন গুলোতে বসবাস সহ ব্যবসা করবেন তাদের বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে বলেন জানান তিনি।
বহুতল ভবনগুলোতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার নিয়ম মানা না হলে আইনে জেল-জরিমানা এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিধান রয়েছে। এ জন্য ভবন মালিক এবং ফায়ার সার্ভিস দু’পক্ষকেই দোষারোপ করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের যে মনিটরিং থাকার দরকার ছিল তা না থাকার কারণেই ভবন মালিকদের অবহেলা। এখন অনেক উচ্চ ভবন হচ্ছে, কিন্তু সেখানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের যে ধরণের যন্ত্র রয়েছে সেগুলোরও এই ভবন গুলো অগ্নি নির্বাপণ করার ক্ষমতা নেই।

ভবন তৈরির ক্ষেত্রে আইন না মানার বিষয়টি স্বীকার করে সি ডি এ কর্তৃপক্ষ বলছে, অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্ণফুলী গ্যাস সিস্টেম, ওয়াসা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, যারা ছাড়পত্র নেবেনা তারা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ পাবেনা। ফলে এই ভবন গুলো কোন কাজে আসবেনা। আর যাতে ভবিষ্যতে এমন না হয় সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
৬০ লাখ লোকের চট্টগ্রামে ৬ তলার ওপরের ভবনের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। সুত্র: সময় টিভি