
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় চুনতিতে স্থানীয় সাবেক ইউপি মেম্বার হোসাইন আহমদের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। সশ্বস্ত্র ডাকাতদল তাঁর বড় ভাই মৃত ছিদ্দিক আহমদের বাড়ির লোহার দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে গৃহকর্তা ব্যবসায়ী মো: জাহাঙ্গীর আলম, জাহেদুল আলম ও তাহমিদুল আলম কাউসারের সাথে ডাকাতদের হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে ডাকাতদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন ব্যাবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৫৫)। আহত হন তাঁর ভাই জাহেদ (৪৭) ও কাউছার(২৮)।
১৬ জুলাই (বৃহষ্পতিবার) দিনগত গভীর রাতে উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের মিরিখিল এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। গুলিবিদ্ধ জাহাঙ্গীর আলম ওই এলাকার মৃত ছিদ্দিক আহমদের ছেলে ও বটতলীর ব্যবসায়ী। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ব্যবসায়ী মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনারদিন রাতে আমাদের পারিবারিক পুকুরে বড়শী দিয়ে মাছ ধরছিলেন আমার ভাগিনা ইঞ্জিনিয়ার তানভীর, নাঈমুদ্দীন, ইমরান, সালমান ও জুয়েল। এমন সময় রাত ৩টার দিকে ১০/১২ জনের মুখোশধারী একটি সশস্ত্র ডাকাত দল প্রথমে তাদের মারধর করে পুকুর সংলগ্ন আমার চাচা মনির আহমদের বাড়ীতে নিয়ে বেঁধে রাখে। এ সময় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা ও ব্যবহৃত ৭টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়।
এরপর আমার আরেক চাচা চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সাবেক মেম্বার হোসাইন আহমদের বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমিরা খোলে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও একটি আয়রণ নিয়ে যায়। পরে আমার বাড়ির গ্রিলের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করলে আমি, ছোট ভাই জাহেদুল আলম ও তাহমিদুল আলম কাউছারের সাথে ডাকাতদের হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে আমার ডান হাতের কব্জিতে গুলি করে এবং কপালে লোহার রড় দিয়ে আঘাত করে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এতে আমি গুলিবিদ্ধ ও গুরতর আঘাতপ্রাপ্ত হই। এসময় আমার ভাই জাহেদুল আলম ও কাউছারও আহত হয়।
ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের প্রতিবেশী মকবুল আহমদ বলেন, ডাকাতি ও হামলার শিকার পরিবারের লোকজনের আত্নচিৎকার ও চেঁচামেচি শুনে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে সেদিকে যাওয়ার পথে ১০/১২ জনের সশস্ত্র ডাকাতের দল আমাকে চড়-থাপ্পড় মেরে আমার হাতে থাকা টর্চলাইটটি ছিনিয়ে নেয়। তিনি আরো জানান, ডাকাতদলের সদস্যদের মধ্যে ৬/৭ জন হাফ-প্যান্ট পরা এবং ৪/৫ জন লুঙ্গি পরা ছিল।
ডাকাতির খবর পেয়ে দিনগত রাত ৪টার দিকে চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো: আলমগীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরদিন আজ শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে লোহাগাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম, দুপুর ১২টার দিকে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তাঁরা ডাকাতি ও হামলার শিকার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা, রক্তমাখা শার্টসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করেন। অন্যদিকে, এডাকাতির ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি। আমি নিজেও ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আলামত জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।