
চট্টগ্রাম মহানগরীর ফিসারীঘাটের মাছের আড়তে অভিযান চালিয়ে বিক্রয় নিষিদ্ধ প্রায় ২০০ কেজি নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। এ ঘটনায় এক ব্যবসায়ীকে অর্ধ লাখ টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মাছের বাজার ও আড়তে নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ ও আফ্রিকান মাগুর বিক্রয়ের অভিযোগ উঠার পর আজ শনিবার (১৮ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এ অভিযান পরিচালনা করে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুকের নেতৃত্বে ৪ ঘন্টা ব্যাপী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুক জানান, অভিযানে নগরীর ফিশারীঘাটে মাছের আড়তে নিষিদ্ধ পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর মাছ বিক্রয় ও সংরক্ষন করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়। এক পর্যায়ে মমিন সওদাগরের আড়ত নামে একটি আড়তে পিরানহা মাছের সন্ধান মিলে। সেখানে বিক্রয়ের জন্য সংরক্ষিত প্রায় ২০০ কেজি নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ করে এবং তাকে নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ বিক্রি ও সংরক্ষণের দায়ে পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। একই সাথে আদালত এই মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয় যে, সে ভবিষ্যতে আর নিষিদ্ধ পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর মাছ ক্রয়, সংরক্ষণ ও বিক্রি করবে না।
অন্যদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের খবর পেয়ে ট্রাকভর্তি প্রায় এক মেট্রিক টন নিষিদ্ধ পিরানহা মাছসহ ট্রাক ফেলে মালিকসহ ড্রাইভার পালিয়ে যায়। মাছগুলো জব্দ করে তা জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়।
জানাগেছে, ফিশারীঘাটে মমিন সওদাগরের মাছের আড়তের বিক্রয় রেজিস্ট্রার খাতা যাচাই করে দেখা যায় তিনি পিরানহা মাছ না লিখে চাঁন্দা মাছের নাম লিখে রেখেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে বিক্রয়কর্মী বলেন ফিসারীঘাটে পিরানহা মাছকে চাঁন্দা বা চাঁদা মাছ বলে। অনেকেই জানেন না অনেকটা রুপচাঁদা মাছের মতো দেখতে এই মাছের নাম পিরানহা। যার ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা অনায়াসে মানুষ ঠকাচ্ছে হরহামেশা।

তিনি আরও বলেন, পিরানহা মাছটি রাক্ষুসে স্বভাবের। এদের ছোট চোয়াল হলেও ত্রিভুজাকৃতির ক্ষুরের মতো ধারালো দুইপাটি দাঁত আছে। অন্য প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণীদের খেয়ে ফেলে খুব সহজে ।দেশীয় প্রজাতির মাছ তথা জীববৈচিত্রের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরুপ এই পিরানহা মাছ। সরেজমিনে পাওয়া তথ্যানুযায়ী,পিরানহা মাছ ও আফ্রিকান মাগুর মাছগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন সাতক্ষীরা, কক্সবাজার, কুমিল্লা, চাঁদপুর, এমনকি ভারত থেকে চট্টগ্রামের ফিসারীঘাটের আড়তে আসে।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন ও মৎস্য জীববৈচিত্রের জন্য ভয়ানক হুমকি স্বরুপ এই পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর মাছের পোনা উৎপাদন, চাষ,বাজারজাতকরণ, পরিবহন ও মজুদ নিষিদ্ধ করেছে সরকার।সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে যারা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্ষতিকর ও রাক্ষুসে পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুরের চাষ ও ক্রয় বিক্রয়ে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ে হবে।
অভিযানে আরও ছিলেন জেলা মৎস্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো আনোয়ারুল আমীন, আবুল কালাম আজাদ, কামাল উদ্দিন, কোস্টগার্ডের পতেঙ্গা পুর্ব জোনের সিপিও শফিউল্লাহ ও সিএমপি পুলিশ সদস্যরা।