
চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে পাহাড়ি এলাকা থেকে নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে
এ ছাড়া নগরী ও জেলার বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দাদের জন্য খোলা হয়েছে ১৯ টি আশ্রয়কেন্দ্র।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনে জানান, অব্যাহত ভারী বর্ষণে দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৭ টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়সহ এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
করোনাভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে যাতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরে নিরাপদে অবস্থান গ্রহণ করতে পারে এজন্য চাঁন্দগাও, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ এবং কাট্টলী সার্কেলাধীন এলাকায় মোট ১৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে চলমান ভারী বর্ষণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৬ টি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর স্থানীয় কাউন্সিলরগণের সাথে সমন্বয় করে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছেন।
স্থানীয় মসজিদ গুলো থেকেও মাইকিং এর মাধ্যমে লোকজন কে নিরাপদ অবস্থানে আশ্রয় নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে-পরে এবং বৃষ্টির তীব্রতা অনুযায়ী মসজিদের মুয়াজ্জিনগণের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে আহ্বান করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানাগেছে, মঙ্গলবার দিনভার মা্ঝারী থেকে ভারী বর্ষণে নগরীর মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, একে খাঁন পাহাড়, ট্যাংকির পাহাড়, আমিন জুট মিলস এলাকা, রউফাবাদ, খুলশী, পাহাড়তলি, ফয়েজ লেক আকবর শাহ এলাকার ঝিল-১,২,৩ নং এলাকা, জিয়ানগর, মধ্যমনগর, মুজিব নগর, শান্তিনগর এলাকা, কৈবল্যধাম বিশ্বকলোনী এলাকা, ফিরোজ শাহ এলাকা, ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট এলাকা, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকা মানুষের জানমালের সুরক্ষায় জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড় থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে মাইকিং কার্যক্রম চালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে কনকর্ড গ্রুপের সাথে ফয়েজ লেক এলাকার চুক্তিভুক্ত অপদখলীয় পাহাড়ি জায়গা বিশেষ করে আকবর শাহ থানাধীন ফয়েজ লেক এলাকাভুক্ত ঝিল-১,২,৩ নং এলাকা, জিয়ানগর, মধ্যমনগর, মুজিব নগর, শান্তিনগর এলাকা, লেকসিটি এলাকায় জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে মাইকিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এসব এলাকা কনকর্ড গ্রুপ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় থাকার কথা থাকলেও এখানে বিশাল এলাকা জুড়ে ঝুঁকি পূর্ণ স্থাপনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে চট্টগ্রাম মহানগরীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণের তত্ত্বাবধানে
মোট ১৯ টি আশ্রয়কেন্দ্র জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সিটি কর্পোরেশন এর সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর এবং জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সমন্বয় করে ত্রাণকার্য পরিচালনা করবেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা বিবেচনায় যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে এবার দ্বিগুণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি)গণের তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের কর্মচারী এবং কাউন্সিলরদের স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ১৭ টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে লোকজনকে অপসারণ করা হচ্ছে। তবে করোনাভাইরাস এর সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজন সরে গিয়ে তাদের নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজনের বাসায় নিরাপদ আশ্রয় নিচ্ছে।