
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব চলাকালীন মতিঝিল এলাকায় ডিউটিরত ছিলেন কনস্টেবল আসাদুজ্জামান। কালক্রমে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে তিনি পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। সেদিন তাণ্ডব নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি চালতে নির্দেশ দেয়া হয়। অন্য সবার মতো আসাদুজ্জামানকেও দেয়া হয় শর্টগানের কার্তুজ (গুলি)। ছিল চালানোর নির্দেশও। তবে গুলি ব্যবহার না করে নিজের ট্রাঙ্কে ২৪টি গুলি রেখে দেন আসাদুজ্জামান। এই গুলিসহ তাকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানার পুলিশ। অস্ত্র মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) আসাদুজ্জামানকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। অস্ত্র আইনে করা মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসাদুজ্জামান বর্তমানে ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিমে এএসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার বিপি নম্বর-৮২০২০৭৯৯১৮।
আসামির রিমান্ড আবেদন থেকে জানা যায়, ২১ জুলাই বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় রাষ্ট্রপতির প্রটোকল ডিউটির সময় শাহবাগ থানার পুলিশ দেখতে পায়, গণিরোডের পুলিশ প্রটেকশন বিভাগের এটিএম বুথের পেছনে একটি ট্রাঙ্ক দেখতে পায়। ট্রাঙ্কের নিচের অংশ জীর্ণশীর্ণ হওয়ায় কিছু অংশ ভেঙে পড়লে সাতটি শর্টগানের কার্তুজ পড়ে যায়। এরপর শাহবাগ থানার পুলিশ ট্রাঙ্কটি তল্লাশি করে আরও ১৭টিসহ মোট ২৪টি কার্তুজ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে ট্রাঙ্কটির মালিককে খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে বুধবার (২২ জুলাই) আসাদুজ্জামানকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, ২০১৩ সালে সে মিরপুর পিওএম উত্তরে কর্মরত ছিলেন। সে বছর ফেব্রুয়ারি মাসে হেফাজত ইসলামের তাণ্ডব চলাকালীন মতিঝিল এলাকায় ডিউটির সময় সরকার থেকে দেয়া তার নিকট থাকা অস্ত্র-গুলি থেকে কয়েক রাউন্ড ফায়ার করেন। নিয়মানুসারে ডিউটি শেষে পিওএম অস্ত্রাগারে অবশিষ্ট গুলি জমা দেয়ার কথা থাকলেও আন্দোলনের সময় গুলিসমূহ শেষ হয়েছে বলে জমা না দিয়ে ব্যক্তিগত ট্রাঙ্কে কার্তুজগুলো রেখে দেন। ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পদোন্নতি হলে সে তার ট্রাঙ্ক-বোর্ডিংসহ আব্দুল গণি রোডের পিসিআরের ২ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ তলায় স্থানান্তর হন।