
রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন আগামী বছরের প্রথমদিকে কোরিয়ান সরকারের অর্থায়নে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে। যেখানে রেলপথ এবং সড়কপথ একসঙ্গে থাকবে। ২০২২ সালের মধ্যে নতুন কালুরঘাট সেতুর বাস্তবায়ন হবে।
তিনি আজ (৭ অক্টোবর) চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি রেল-সড়ক সেতু নির্মাণে স্থান পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নদী কর্ণফুলী। এ নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুটি রেল কাম সড়ক সেতু করার মানুষের যে দাবি তা শিগগিরই পূরণ হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী আমাকে জানায়, সেতুটি রেল কাম সড়ক সেতু করার উদ্যোগ নিয়েছেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই সেতুটি আগেই নির্মাণ করা যেত। একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল যেখানে আলাদা রেলসেতু হবে নাকি রেল ও সড়ক একসঙ্গে হবে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদেশি ঋণদানকারী সংস্থা কোরিয়ান ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। সবকিছু এখন ঠিক করা হয়েছে। আশা করছি আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেতু নির্মাণের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে, স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখার জন্যই আমি এসেছি। এ সেতুটি যেমন খুবই দরকার, তেমন ভবিষ্যতে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি রেললাইন সংযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা জরুরী। ২০২২ সালের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হয়ে যাবে। একই সময়ের মধ্যে যাতে সেতুটির নির্মাণ শেষ করা যায় সে চেষ্টা আমরা করব।’
মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন গরিব-দুঃখী, মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা। এ অঞ্চলের মানুষের কষ্ট লাঘব হবে সেতু নির্মিত হলে।’
উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালে কালুরঘাট সেতুটি মিটার গেজ লাইন বিশিষ্ট রেল সেতু হিসেবে নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে সড়ক সেতু যুক্ত করে রেল কাম সড়ক সেতুতে রূপান্তরিত করা হয়। বর্তমানে সেতুটি জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে।
এটি নির্মিত হলে নিরবচ্ছিন্ন রেল পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা যাবে এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার করিডোরের অপারেশনাল বাধা দূর করা যাবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নত করা এবং আঞ্চলিক বিনিময় সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য বৃহত্তর করিডর তৈরি হবে, বাণিজ্যিক রাজধানীর যানজট হ্রাস পাবে, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশবিশেষ হিসেবে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।