Search
Close this search box.

ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

বিষ্ময় বালক বাংলাদেশি সুবর্ণ! (ভিডিও সহ)

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

Untitled-1
সুবর্ণ আইজ্যাক বারি। ছবিঃ সংগৃহীত

আসলেই বিষ্ময় বালক সে। বয়স সবে মাত্র চার বছর। আর ছয় বছর পরই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখে। এর পেছনে যুক্তিও আছে। এ বয়সে অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলেও যায় না, কিন্তু সুবর্ণ অনেক কঠিন ও জটিল বিষয়ের সমাধান করছে নিমিষে। এরই মধ্যে এলাকায় ক্ষুদে আইনস্টাইন খেতাব পেয়ে গেছে।

পুরো নাম সুবর্ণ আইজ্যাক বারি। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি দম্পতি রাশেদুল বারি ও শাহেদা বারির সন্তান সে। সুবর্ণের জন্ম ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল। সে এখন তার বাবার ল্যাবরেটরিতে যাচ্ছে এবং অঙ্কশাস্ত্র ছাড়াও রসায়নের বিভিন্ন বিভাগ সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছে।

যদিও তার নামের সঙ্গে আইজ্যাক রয়েছে। কিন্তু তাকে বলা হচ্ছে ভবিষ্যতের আইনস্টাইন। কেননা এ বয়সেই সে ইংরেজি, অ্যালজেবরা, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা ও জ্যামিতিতে সমান পারদর্শী। স্কুলের আঙিনায় পা রাখার আগেই জ্যামিতি, অ্যালজেবরা, রসায়নের জটিল বিষয়ের সহজ সমাধান দিচ্ছে।

সুবর্ণ ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হইচই ফেলে দিয়েছে। অক্ষরজ্ঞানের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করা ছাড়াই কীভাবে সে ইংরেজি বই অবলীলায় পড়ছে তা এখন অনেকেরই বিষ্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাত্র দেড় বছর বয়সে রসায়নের পর্যায় সারণি তথা কেমিস্ট্রি পিরিয়ডিক টেবিল মুখস্থ, দুই বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে সাক্ষাৎকার, ভয়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকার, তিন বছর বয়সে লেবুর সাহায্যে ব্যাটারি এক্সপেরিমেন্ট এবং সাড়ে তিন বছর বয়সে খ্যাতনামা একটি কলেজের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের আমন্ত্রণ পায় সুবর্ণ!

অত্যন্ত মেধাবী এই ছেলের প্রতিভা সম্পর্কে বাবা-মা প্রথম বুঝতে পারেন ২০১৩ সালে যখন তার বয়স মাত্র এক বছর। তখন সুবর্ণ নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালের বিছানায় জ্বরে কাতরাচ্ছিল। সেখানে একদিন তার বাবা রাশীদুল বারি তাকে বললেন, ”আই লাভ ইউ মোর দ্যান এনিথিং ইন দ্য ইউনিভার্স।” সুবর্ণ তখন বলল, ”ইউনিভার্স অর মাল্টিভার্স?” এতে চমকে গেলেন কলেজশিক্ষক রাশেদুল বারি। কিন্তু তখনো তিনি জানতেন না এই সুবর্ণ তিন বছর বয়সে অঙ্ক, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে দক্ষতা দেখিয়ে সাড়া ফেলবে।

এর কয়েক মাস পর একদিন সুবর্ণকে তার মা অঙ্ক শেখাচ্ছিলেন। হঠাৎ সুবর্ণ তার মাকে বলল, ”If 1 + 1 = 2, then n + n must be 2n; if 2 x 2 = 4, then n x n must be …”

রাশেদুল বারি বলেন, স্ত্রীর কাছ থেকে এ কথা শুনে অভিভূত হয়ে পড়েন তিনি। আনন্দে তার চোখে জল এসে যায়। স্ত্রী জানতে চাইলেন, কাঁদছ কেন? দেড় বছরের ছেলের অঙ্কশাস্ত্র প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে রাশেদুল তাকে অ্যাডভান্সড ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্সের পাঠ দেওয়া শুরু করেন। আর এভাবেই মাত্র দুই বছর বয়সে সুবর্ণ রসায়নের পিরিয়ডিক টেবিল মুখস্থ করে ফেলে।

এদিকে এই অবিশ্বাস্য ও বিস্ময়কর প্রতিভাধর শিশুর কথা সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মেডগার এভার্স কলেজের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড পোজম্যান সুবর্ণর মেধা যাচাই করতে চান। সুবর্ণ পর্যায় সারণির সবগুলো এলিমেন্ট বলে পোজম্যানকে অবাক করে দেয়। সেদিন তিনি এতই মুগ্ধ হন যে তাকে তিনি ‘মোজার্ট অব কেমিস্ট্রি’ বলে অভিহিত করেন।

বিস্ময়কর প্রতিভা সুবর্ণর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর একদিন ডাক পড়ে তার ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ থেকে। বাবা রাশেদুল বারি তাকে নিয়ে যান ওয়াশিংটন ডিসিতে ভয়েস অব আমেরিকার স্টুডিওতে। সেখানে সাবরিনা চৌধুরী ডোনা তার সাক্ষাৎকার নেন এবং বছরের সেরা সাক্ষাৎকার হিসেবে তারা এটা বাছাই করে নববর্ষে পুনঃপ্রচার করে।

ওই সাক্ষাৎকারেও সে নির্ভুলভাবে সব রাসায়নিক সংকেতগুলো বলে যায়। একটি আপেল কেটে সে সহজে বুঝিয়ে দেয় এটম তত্ত্ব। পরমাণুর বিভাজন (ইলেকট্রন, নিউট্রন, প্রোটন) বর্ণনা করে সে। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে যখন আড়াই বছরের এই শিশু পর্যায় সারণির সব এলিমেন্টের নাম বলে যাচ্ছিল অবলীলায়।

ছোট্ট সুবর্ণ এরই মধ্যে অনেকগুলো সায়েন্টিফিক এক্সপেরিমেন্ট করেছে। যার একটি ইলেকট্রিক ব্যাটারি। সে জন্য সে আবার পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন অধ্যয়ন করছে। বিভিন্ন রকম ব্যাটারি সে বানাচ্ছে। তার একটি হচ্ছে লেমন ব্যাটারি। যেটা বানাতে তার দরকার হয় চারটি লেবু, চারটি পেরেক, চারটি মুদ্রা এবং পাঁচটি এলিগেটর কিপ। এগুলো দিয়ে সে ইলেকট্রিক সার্কিট বানিয়ে পোটেনশিয়াল ডিফারেন্স সৃষ্টি করে লাইট জ্বালাতে পারে। ২০১৫ সালের ১২ জুন লিমন কলেজের ফিজিক্সের চেয়ারম্যান ড. ড্যানিয়েল কাবাট সুবর্ণর এই প্রতিভা দেখার জন্য তাকে লিমন কলেজে আমন্ত্রণ জানান এবং সুবর্ণ ব্যাটারি বানিয়ে তাকে মুগ্ধ করে।

সুবর্ণের লেমন ব্যাটারি দেখে বিস্মিত হয়েছেন খোদ দ্য সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের প্রেসিডেন্ট লিসা কইকো। তিনি নিজেই এই শিশুর পরীক্ষা নেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি অনলাইন টেলিভিশন টাইম টেলিভিশনে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রচার হয়। এই সাক্ষাৎকারে দেখা যায়, বিস্ময় বালক সুবর্ণ একটি কলমকে লাঠির মতো ধরে সমাধান করে যাচ্ছে একের পর এক কঠিন গণিত, জ্যামিতি, পদার্থ বিজ্ঞানের সমাধান। রাসায়নিক সংকেতগুলো কোনো ভুল না করেই অনর্গল বলে যায়।

চট্টগ্রামের সন্তান রাশেদুল বারির জন্ম ১৯৭৯ সালে। উচ্চশিক্ষার জন্য নিউইয়র্কে আসার পর তিনি ব্রঙ্কসের লিমন কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির বারুখ কলেজে অঙ্কের খণ্ডকালীন অধ্যাপক এবং নিউ ভিশন চার্টার হাইস্কুল ফর অ্যাডভান্সড ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্সে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক। জেরুজালেম পোস্টে তিনি নিয়মিত কলাম লেখেন। রাষ্ট্রনীতি, গণিত, অর্থনীতিসহ পাঁচটি বিষয়ে তার স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে। তার লেখা বই জার্মান সোশ্যাল বিজনেস মডেল আন্তর্জাতিক পরিচিত পেয়েছে। বর্তমানে তিনি ডক্টর ড্যানিয়েল কাবাতের সঙ্গে যৌথভাবে ম্যাথমেটিক্যাল ল’জ অব ফিজিক্স নামে একটি বই লিখছেন।

সুবর্ণর বড় ভাই রিফাত আলবার্ট বারির বয়স ১২। সে-ও অসাধারণ মেধাবী। সপ্তম গ্রেডে পড়ছে সে। হাইস্কুলে না গিয়েই বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে চায় রিফাত। এ জন্য সে তিনবার এসএটিও দিয়েছে।

সুবর্ণর মা শাহেদা বারি ব্রঙ্কস কমিউনিটি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি বলেন, ”আমাদের সন্তানের মেধার জন্য আমরা গর্বিত। সুবর্ণ ভবিষ্যৎ আইনস্টাইন।”

ভিডিও:

সর্বশেষ

সব স্থানে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া সঠিক নয়ঃ মির্জা ফখরুল

সাড়ে ২০ লাখ টাকা খরচেই চালু হচ্ছে কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন

ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়েঃ তাজুল ইসলাম

দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন হাসিনা, সদলবলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পার্কে

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আড়াই কোটি বিদেশী মুদ্রাসহ যাত্রী আটক

বেক্সিমকোর সব সম্পত্তি দেখভাল করতে রিসিভার নিয়োগের লিখিত আদেশ

অপরাধী হলেও যেন তাকে আইনের হাতে তুলে দেয়া হয়, ঢাবি-জাবির ঘটনা দুঃখজনকঃ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print