
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় নার্সদের পরিবর্তে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা দেওয়ায় হইচই পড়ে গেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিও ভাইরাল হয়েছে।
রবিবার সকালে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষিত নার্স পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও চারজনের শরীরে করোনার টিকা দিয়েছেন কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান।
প্রশিক্ষিত নার্সের বদলে একজন জনপ্রতিনিধিদের টিকা দেওয়ার বিষয়কে খুবই ভয়ানক বলে দাবি করেছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট কয়েকজন।
সিভিল সার্জন অফিসের কয়েকজন জানান, দক্ষ নার্স, চিকিৎসক বা চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ এটা পুশ করতে পারেন না।
জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স তাসলিমা আক্তারকে নিজ হাতে করোনা টিকা দিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্থানীয় এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সিরিঞ্জ হাতে নিয়ে তিনজনের শরীরে টিকা দেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান খান। নার্স ও চিকিৎসকরা তাকে সহায়তা করেন।
এমপি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের টিকা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে টিকা পুশ করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা কোনোভাবেই তারা করতে পারেন না। করোনা টিকা দেওয়ার জন্য নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারাই টিকা প্রদান করতে পারেন। অন্য কারো টিকা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এটা হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যে তিনজনের শরীরে করোনার টিকা পুশ করেছেন তারা হলেন- কুমারখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মী মোখলেছুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিক কেএমআর শাহীন। টিকা দেওয়ার সময় সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি নিষেধ করেননি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টিকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ভয় ভয় লাগছিল। অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম। পরে শুনেছি উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা পুশ করেছেন। চেয়ারম্যান না দিয়ে নার্স দিলেই ভালো হতো। তবে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ভালো আছি।
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন বলেন, তিনি সিরিঞ্জ হাতে ধরে ছিলেন কিন্তু তারা পুশ করেননি। ফটো তোলার জন্য ধরে ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত বলেও জানান তিনি।
তবে এ ঘটনার পর সব খানে সমালোচনা শুরু হয়। জানতে চেয়ে আবদুল মান্নান খানের মোবাইলে ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে এবং ফোন রিসিভ করেননি এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ।