
চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানা এলাকাকে দেশের প্রথম মাদকশুন্য থানা এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। এজন্য থানা, ওয়ার্ড এবং পাড়াভিত্তিক ১০০ সদস্য বিশিষ্ট ১০০টি মাদক নির্মূল কমিটি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আগ্রাবাদ মুহুরিপাড়া এলাকাকে মাদকমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আগ্রাবাদ গাউছিয়া ইসলামী পাঠাগার আয়োজিত এক সমাবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। ‘মাদকশুন্য ডবলমুরি থানা’ গড়ার প্রথম ধাপে প্রথম এলাকা হিসেবে এই এলাকাকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন পাঠক ডট নিউজকে বলেন, ‘আমরা দেশের প্রথম থানা হিসেবে মাদকমুক্ত থানা হওয়ার জন্য কাজ করছি। তারই প্রথম সাফল্য এটি। প্রথম এলাকা হিসেবে আমরা মুহুরি পাড়াকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করেছি। ধাপে ধাপে আমরা থানা সংশ্লিষ্ট সব এলাকাকেই মাদকমুক্ত ঘোষণা করব।’

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক বলেন, প্রতি ৩৬ জনে একজন মাদকসেবী আছেন। তাদেরকে কাউন্সিলিং করতে হবে। যারা মাদক সেবন করেন, তাদের কেউ আমাদের ভাই, আমাদের বাবা, আমাদের সন্তান। তাদেরকে আমরা কেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারবো না। আমরা তাদেরকে মাদক ছাড়তে উদ্বুদ্ধ করবো। এটা তো ধর্মীয়ভাবে গর্হিত কাজ। যতদিন পর্যন্ত আমরা ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের মাঝে ছড়াতে না পারবো, ততদিন আমরা এই সমাজকে পরিবর্তন করতে পারবো না।
তিনি বলেন, রাসূল (সা.) যে সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছেন, ইসলামের মধ্যে দিয়ে। আমরা চাইবো, আমাদের এলাকার প্রত্যেকটি মানুষ, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুক এবং নিজেদেরকে মাদকমুক্ত রাখুক। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, অর্থ্যাৎ এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। মাদক যারা বিক্রি করবেন, আর যারা সেবন করবেন তাদেরকে আইন অনুযায়ী শাস্তি পেতেই হবে। মুহুরী পাড়া ঐতিহ্যবাহী এলাকা, এ এলাকায় কোনভাবেই মাদক বিক্রেতা থাকতে পারবে না। মাদকসেবীদের চিকিৎসালয়ে পাঠিয়ে দিতে হবে। সুচিকিৎসার মাধ্যমে তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসতে হবে।

স্থানীয় গাউছিয়া ইসলামী পাঠাগার আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুহুরিপাড়ায় মাদক নির্মূলে গাউছিয়া ইসলামি পাঠাগার, দূর্বার একতা সংঘ, ডলফিন ক্লাব, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ, মুহুরিপাড়া ইউনিট কাজ করবেন বলে নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অধ্যক্ষ আলহাজ্ব এম শাহাজাহান, সালেহ উদ্দিন, মাসুদ পারভেজ, এম জয়নাল আবেদিন, ফিরোজ আহমেদ, ইস্কান্দার মির্জা, তাজউদ্দীন তাজু, আকবার হোসাইন, আবু মুসা চৌধুরী, আল্লামা মহিউদ্দিন নেছারী, আল্লামা আবু জাফর মুহাম্মদ সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে এলাকায় মাদকবিরোধী মাইকিং করা হয়।
প্রসঙ্গত, দেশের প্রথম মাদকশুন্য থানা গড়তে উদ্যোগ গ্রহণ করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে থানা, ওয়ার্ড এবং পাড়া ভিত্তিক ১০০ সদস্য বিশিষ্ট ১০০ টি মাদক নির্মূল কমিটি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তারই একটি আগ্রাবাদ মুহুরিপাড়া মাদক নির্মূল কমিটি। পুলিশ এবং ওই কমিটি প্রায় একমাস এলাকায় প্রচারণা, সচেতনতা এবং অভিযান চালায়। অভিযানে চিহ্নিত এবং তালিকাভুক্ত ৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি বিশেষ একটি টিম গঠন করে দেওয়া হয়। ওই টিম দিনে দুইবার উক্ত এলাকা টহল দেয়।