ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন থানা স্থাপনের প্রস্তাব

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

15271398_10207737796872246_1369059294_o
.

ইমাম হোসেন রাজু:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নতুন একটি থানা করার প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানা’ নামে প্রস্তাবিত থানা বর্তমান হাটহাজারী থানাকে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে এ থানা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে জেলা পুলিশের প্রস্তাবনায়।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সূত্রে জান যায়, সন্ত্রাস, সংঘর্ষসহ খুনোখুনি ঠেকাতে ২০১৫ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন থানা প্রস্তাবনা দেন। নতুন থানার প্রস্তাবনাটি বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন হয়ে গেলে যে কোন মূহুর্তে (বর্তমানে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে তাতেই নতুন থানা ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানায়’ রুপান্তরিত হবে।

জেলা পুলিশ সূত্রমতে: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পুলিশ ফঁড়িটি রয়েছে তাতে জনবল রয়েছে ৩৭ জন। যা দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য খুবই কম। প্রস্তাবনায় নতুন থানার জন্য অতিরিক্ত জনবল ধরা হয়েছে ১৫২ জন। আর এ জনবলের বার্ষিক খরচ দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৬৭ লাখ ৮ হাজার ৪৯১ টাকা। ইতিমধ্যে নতুন থানার প্রস্তাবনাটি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ঘুরে এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে অনুমতি হওয়ার পর যে কোন মূহুর্তে ‘চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় থানা’র কাজ শুরু হবে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) রেজাউল মাসুদ এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবিতে) নতুন একটি থানা খুবই দরকার। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে হারে অপরাধের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে হাটহাজারী থানা হিমশিম খাচ্ছে। এসব অপরাধ মোকাবেলা করতে আলাদা থানা প্রতিষ্ঠা খুবই প্রয়োজন। যার ফলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশ পাশের এলাকাগুলোতে সকল ধরনের অপরাধ মোকাবেলা করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সহজ হবে। তাছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় (চবি) প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যকার সংঘর্ষ বিশেষ করে ছাত্রলীগ-ছাত্র শিবিরের এবং ছাত্র লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে প্রায় ৩০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীরা। যাদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কম নয়। পঙ্গু হয়েছে দুই শাতাধিকেরও বেশি শিক্ষার্থী। আহতের সংখ্যা অগনিত। এরমধ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের মধ্যে সর্বোচ্চ নিহত হয়েছে আট জন।

বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহতদের মধ্যে ছাত্র সংগঠনের কয়েক জন উল্লেখযোগ্যরা হলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ড এর নেতা ফারুকুজ্জাম, ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মুসা, শাখা ছাত্র শিবিরের অর্থ সম্পাদক এনামুল হক, শিবির নেতা মাহমুদুল হাসান, জোবায়ের হোসেন,মুজাহিদুল ইসলাম, মাসুদ বিন হাবিব ও আব্দুর রহিমসহ প্রমুখ। নিহতদের মধ্যে সাধরণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আমিনুল হক বকুল, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আইয়ুব আলী।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে যে সংঘর্ষগুলো হয়েছে- তার রেশ ধরে চট্টগ্রাম নগরীতেও উল্লেখযোগ্য কিছু নেতা-কর্মীরা নিহত হন। এর মধ্যে ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম নগরীর রেলষ্টেশনে শিবির-ছাত্র ইউনিয়নের সংঘর্ষে নিহত হন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা সঞ্জয় তলাপাত্র। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পাটির ছাত্র সংগঠন ছাত্রসমাজের বিশ^বিদ্যালয় শাখা সভাপতি আবু হামিদের হাত কেটে উল্লাস করে সন্ত্রাসীরা। তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বর গেটের এলাকায় জবাই করে খুন হয় ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান।

হাটহাজারী থানা পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা হলো- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিমাণ সংঘর্ষ হানাহানির ঘটনা ঘটে থাকে তা হাটহাজারী থানা পুলিশ সামল দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে মারামারি দাঙ্গা-হাঙ্গামা নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ^বিদ্যালয় ছাড়াও হাটহাজারী থানার অন্য জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নতুন থানা দরকার বলে মনে করেন হাটহাজারি থানার কর্মরত কর্মকর্তাবৃন্দ।

এদিকে প্রস্তাবিত নতুন থানার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- চট্টগ্রাম শহরের পাশ্ববর্তী হাটহাজারী উপজেলা একটি বড় আয়তনের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এ বিরাট এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পতিনিয়তই পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে হাটহাজারী থানা পুলিশ কে আসতে আসতে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যায়। কারণ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আসতে হলে হাটহাজারী থানা পুলিশকে আসতে হয় পাঁচ কিলোমিটার দুর থেকে। যার কারণে তা হাটহাজারী থানা পুলিশের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাতে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানা’ নামের নতুন একটি থানা দরকার।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা পাঠক ডট নিউজকে বলেন, নতুন থানা গঠিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকাবাসীর জানমালের নিরাপত্তাসহ সার্বিক আইন শৃংখলা রক্ষা করতে পুলিশের পক্ষে আরো সহজ হবে। তাছাড়া দীর্ষদিন যাবৎ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের লোকবল সংকটে ভুগছে। এই প্রক্রিয়ার ফলে সংকটটিও দুর হবে বলে মনে করেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানা (প্রস্তাবিত) যেসকল ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করার কথা চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে, সে ইউনিয়ন গুলো হলো-ফতেপুর ইউনিয়ন, চিকনদী ইউনিয়ন, দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়ন, শিকারপুর ইউনিয়ন ও বুড়িশ্চর ইউনিয়।

জানা যায়, নতুন থানা ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানার’ আয়তন হবে ৭৮ বর্গকিলোমিটার। প্রস্তাবিত নতুন এ থানা এলাকায় রয়েছে ৪১টি ব্যাংক, একটি বাজার ও ৭৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print