
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার প্রথম নির্মিত স্মৃতিসৌধ অযন্ত অবহেলায় রয়েছে। অরক্ষিত এ স্মৃতিসৌধ’র স্মৃতি ৭১’এর জাতির সূর্য সন্তানদের আবেগ তাড়িত করে আজো।
১৯৭১ সাল। উত্তাল সারাদেশ। দেশের মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনতা জন্য প্রাণপণচট্ট লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। ৭১ সালের ২৮ আগষ্ট বোয়ালখালী উপজেলা সদরে সিও অফিস রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করতে গিয়ে শহীদ হন, এস এম ওয়াজেদ, রেজাউল করিম বেবী ও ওস্তাদ ফজলুল হক। শহীদ হন, মুক্তিযোদ্ধা মাষ্টার নলীনি দাশগুপ্ত, অজিত বিশ্বাস, মনোরঞ্জন শীল, রনজিত মজুমদার,সমীর মজুমদার, দুদু মিয়াসহ আরো অনেকে।

ডিসেম্বরে শত্রু মুক্ত হয় দেশ। শহীদের স্মরণে প্রথম স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী কঞ্জুরীর গ্রামে। নাম করণ করা হয় “শহীদ ভবন”। নাম “শহীদ ভবন” হলেও বাস্তবে এখানে কোন ভবন নেই।
পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালে ২২ ডিসেম্বর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাবুদ্দিন খান এই ‘শহীদ ভবন’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভিত্তিপ্রস্তরেই রয়ে গেছে শহীদ ভবন। ভবন আর হয়নি। স্বাধীনতার ৪৫ বছরেরও সরকারিভাবে কোন ধরনের সংস্কার কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের পদক্ষেপও নেয়া হয়নি বলে জানান, মুক্তিযোদ্ধা সুজিত নাগ।
রবিবার পাঠক ডট নিউজ এর সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। আক্ষেপ করে এ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমরা নিজেদের যশ খ্যাতির জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। যুদ্ধ করেছিলাম মুক্তির জন্য, মা-বোনদের ইজ্জত ও দেশের মাটিকে রক্ষার জন্য।
তিনি আরো বলেন, ভবন আমরা করতে পারিনি, তবে এই ভবনের মাঠে আয়োজন করা হয়, অমর একুশ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান, গ্রামীণ লোকজ মেলা, খেলাধুলাসহ আলোচনা সভার।

এতে পদচারণা ঘটে দেশের বিখ্যাত নাঠ্যজন, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজিবীদের মতো গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর অনুষ্টান হয়, পর্যাপ্ত জায়গা থাকার পরও একটি ভবন হয়না। আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যেই আমরা নামটিকে ৪৫ বছর ধরে আঁকড়ে রেখেছি।
এখন সময়ের দাবি একটি ভবনের। সেখানে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও দেশ মাতৃকার রক্ষায় যারা জীবন দিয়েছে ও যুদ্ধে গিয়েছেন তাদের স্মৃতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সঠিক ঐতিহ্যকে আকড়ে ধরবে আগামী প্রজন্মরা।