
কঠোর লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ পোশাক কারখানা খোলার ঘোষণায় ঢাকা চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। কর্মজীবী নারী ও পুরুষরা যে যেমন পরিবহন পাচ্ছেন তাতে চেপেই ঢাকায় ফিরছেন।
শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কর্মস্থলে ফেরা এসব শ্রমজীবী মানুষ খোলা ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেটকার, সিএনজি ও মোটরসাইকেলে গাদাগাদি করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়া বৃষ্টিতে ভিজে খোলা ট্রাক ও মোটরসাইকেলে চড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এসব কর্মজীবী মানুষকে।

মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, টাঙ্গাইল বাইপাস, রাবনা বাইপাস, মির্জাপুর অংশে যাত্রীদের প্রচুর ভিড় রয়েছে। তবে মহাসড়কে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা এসব বিষয়ে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
গার্মেন্টস শ্রমিকরা বলেন, ছুটি নিয়ে ঈদে বাড়িতে আসছিলাম। পরিবহন খুলে না দিয়ে কীভাবে পোশাক কারখানা চালু করল। এখন শ্রমিকরা কীভাবে কর্মস্থলে ফিরবে। কিছু যানবাহন পাওয়া যায় তাতেও তিনগুণ ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। সরকার যাই বলুক নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগদান করতে না পারলে চাকরি থাকবে না। তাই বাধ্য হয়ে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।

আরেক গার্মেন্টস কর্মী ইসরাত জানান, গার্মেন্টস খোলার ঘোষণার পর কোম্পানি থেকে নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে। তাই তাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই চাকরি বাঁচাতে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মহাসড়কের এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত জানান, সরকার নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ জেলা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত রয়েছেন।
চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শুক্রবার (৩০ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ১ আগস্ট থেকে শিল্প কারখানা খোলা থাকবে।
এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা বিধিনিষেধের আওতা-বহির্ভূত রাখা হলো।
ফলে রপ্তানিকারকেরা হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। কিন্তু চলমান বিধিনিষেধে শ্রমিকেরা দূর দূরান্ত থেকে কিভাবে কর্মস্থলে ফিরবেন তার কোনো নির্দেশনা ছিল না। এমন শঙ্কার মধ্যে চাকরি বাঁচাতে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই তারা কর্মস্থলে ফিরছেন।