
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানে গুলি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আ’লীগের দু’গ্রুপে বিরোধের জেরে চন্দনাইশ উপজেলার বাগিচারহাট এলাকায় মহাসড়কের পাশে মক্কা পেট্রোল পাম্পের পাশে অনুষ্ঠানস্থলে সংঘাতের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় একঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চন্দনাইশের হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস ও একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। তিনি বক্তব্য শেষ করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগের পর সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আকস্মিক ফাঁকা গুলি শুরু হয়। এরপর সভামঞ্চ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে একদল তরুণ-যুবক।

এতে স্থানীয় নেতারা আর বক্তব্য দিতে না পেরে সভাস্থল ত্যাগ করে পাশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে ওই কমিউনিটি সেন্টারেও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ পাল্টাপাল্টি ইট-পাটকেল নিক্ষেপে জড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর সভা আহ্বানকারীরা মহাসড়কে এসে অবরোধ করেন। এতে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে এবং মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়।
সংঘর্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সমর্থকদের তিন থেকে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা ও বর্তমান নয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লোকমান হাকিম ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিনের পরিচয় জানা গেছে। এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরে পুলিশের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। যানবাহন চলাচল পরে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এদিকে, এ ঘটনায় হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

চন্দনাইশ থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, একটি সভায় দুই গ্রুপের মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু গুলির বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি তারা।
জানা গেছে, শোকসভায় সভাপতির বক্তব্যের শেষ সময়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে দুই গ্রুপ মারামারিতে জড়ায়। এসময় ছয় সাত রাউন্ড গুলি চলে। গুলিতে তিন থেকে চারজন আহত হন।
সোমবার চন্দনাইশের হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম বাবুল। প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ জুনু, বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন সুজন।