
সেনাবাহিনীর মেজর (অব:) সিনহা মো: রাশেদ হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ রবিবার। ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা চার দিন চলবে। এ সময় অন্তত ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হতে পারে। এ মামলার মোট সাক্ষী ৮৩ জন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আদালতকে দেয়া জবানবন্দিতে বাদী শারমিন শাহরিয়া বলেন, টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নির্দেশে পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে খুন হন সিনহা মো: রাশেদ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ জেনে গত বছরের ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এ হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তিনি অভিযোগপত্রভুক্ত ১৫ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন আদালতের কাছে।
আদালত পরিচালনা করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, সাহেদুল ইসলাম (সিফাত) ঘটনার সময় সিনহার সাথে ছিলেন ও ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শীও তিনি। তার সামনেই সিনহার খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে তিনি কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে গেছেন। ইতোমধ্যে তিনি সাক্ষী দিয়েছেন আদালতে। এ সময় তাকে অন্তত ছয় ঘণ্টা জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তারপর আদালতে সিফাত হত্যাকাণ্ডের বাস্তবচিত্র তুলে ধরতে পেরেছেন।
মামলা সূত্র জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো: রাশেদ খান। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। পুলিশের মামলায় সিনহার সাথে থাকা সাহেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকেও আটক করে পুলিশ। পরে নুরকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সাহেদুলকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
ঘটনার পাঁচ দিন পর গত বছরের ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো: খাইরুল ইসলাম। গ্রেফতার আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তৎকালীন ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।