
চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণেলহাট (কাট্টলী) এলাকার বাড়ি ঘেরাও করে গ্রেফতারকৃত ৫ জঙ্গি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকতুল জেহাদ (হুজি) সদস্য বলে জানিয়েছেন র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান শেষে এক ব্রিফিং এ র্যাব-৭ এর পরিচালক (মিডিয়া) মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃত ৫ হুজি সদস্য হলো- হুজি ঢাকা আঞ্চলিক কমান্ডার তাজুল ইসলাম, হুজি কুমিল্ল আঞ্চলিক কমান্ডার মাওলানা মো. আবুজর গিফারী, নাজিমুদ্দিন, নূরে আলম, এহতেশাম আহমেদ। এদের সবাই হরকাতুল জিহাদের মুফতি মাইনুল ইসলামের অনুসারী।
এসময় সেখান থেকে ১২টি জাতীয় পরিচয়পত্র, ২টি পিস্তল ও বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য,৭টি ম্যাগজিন,গুলি,জিহাদি বই,সিডিসহ বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।

ব্রিফিং এ র্যাব পরিচালক জানায়, বুধবার মধ্যরাতে নগরীর পাহাড়তলী একে খাঁন এলাকা থেকে দুজন ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র্যাব। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে নগরীর আকবর শাহ থানার কর্নেলহাট মুকিম তালুকদার পাড়ার একটি দোতলা বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে বাড়িটির চারপাশে অবস্থান নেয় র্যাব। এরপর সকাল ৮টায় চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অভিযান শেষে বাড়ির ভেতর থেকে আরো তিন হুজি সদস্যকে আটক করে।

আটককৃতদের মধ্যে রাতে অস্ত্রসহ তাজুল ইসলাম ও নাজিম উদ্দিনকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি আস্তানা থেকে নুরে আলম, হাফেজ আবু জার গিফারি ও ইফতিশাম আহমেদকে আটক করা হয়। এরা সবাই জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি মাইনুল ইসলামের সহযোগী।
র্যাব আরো জানায়, চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এখানে তারা বাসা ভাড়ার ব্যাপারে কথা বলে যায়। ডিসেম্বরের ১ তারিখে তারা বাসাটিতে ওঠে। বাড়ির মালিককে তারা বলেছিল বাসায় ওঠার কিছুদিনের মধ্যেই ফ্যামিলি নিয়ে আসবে। এর মধ্যে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব এ অভিযানে নামে। বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েই তারা এখানে এসেছিল বলে র্যাব ধারণা করছে।

অভিযানকালে তারা ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোনে আগুন দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায় তাদের সব তথ্য মুছে ফেলেছে বলে মনে করছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
পরে ভবনের প্রধান গেইট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে র্যাব। এসময় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো বাড়ী। এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দেরকে আতংকিত না হতে এবং জঙ্গিদেরকে বের হয়ে আসতে হ্যান্ড মাইকে ঘোষনা দেয় র্যাব।

স্থানীয় নুরুল আলম মেম্বার জানান, আটককৃতরা গত কয়েকদিন আগে বাড়ীটির একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল ৪ হাজার টাকা ভাড়ার মধ্যে ১ হাজার টাকা অগ্রিম দেন তারা। বুধবার তারা পরিবারের সদস্যদের সেখানে নিয়ে আসার কথা। কিন্তু রাতে কোন মহিলা সদস্য আসেনি। আসে আরো দুজন পুরুষ এবং বেশ কিছু মালামাল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, র্যাব-৭ এর পরিচালক মিফতাহ উদ্দীন জানান, অভিযান শেষ করলেও এখন পুরো বাড়িটি তল্লাশি করা হবে।