
কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড:
জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় সমাজ সেবা অফিস থেকে বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়ষ্ক ভাতার দুই হাজার বই হারিয়ে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন সুবিধাভোগী পরিবারগুলো।
এ কারণে প্রায় ১ বছর যাবত বিধাবা ও বয়স্ক ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। সমাজ সেবা অফিসের অফিসের গাফিলতির কারণে এমনটা হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এছাড়াও সেবা গ্রহণ করতে আসা লোকজন প্রতিনিয়ত নানা ধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ও বয়ষ্ক ভাতাসহ সরকারী উপকার ভোগীদের বই হারানো প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
তবে বই গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বিকার করে সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্মকর্তা বলছেন আগে এনালাগ সিসটেমে বাইয়ের মাধ্যমে ভাতা দেয়া হলেও এখন ডিজিটাল সিসটেমে মোবাইল ব্যাংকিং ভাতা দেয়া হয়। যার কারণে বইয়ের প্রয়োজন পড়ছে না।
জানা যায় এরকম অন্তত ২০০০ উপকার ভোগীর বই হারিয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলা সমাজ সেবা অফিস। উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের কেদারখীল গ্রামের আশি বছরের বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম গত বছর সরকার সরাসরি উপকারভোগীকে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত (জিটুপি) নিলে সবার মত তিনিও বইটি সীতাকুণ্ড উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে জমা দেন। সমাজ সেবা অফিস তাকে বইটি আর ফেরত দেয়নি। ফলে এক বছর যাবত বিধবা ভাতা থেকে তিনি বঞ্চিত রয়েছেন। তিনি জানান, সমাজ সেবা অফিসে গত কয়েকমাস ঘুরেও এর কোন সমাধান পাননি।
এছাড়া কুমিরা ইউনিয়নের বিধবা নীহারবালা, প্রতিবন্ধী রঞ্জিত জলদাসের পিতা নরউত্তম জলদাস, বাড়বকুন্ডের রেহানা বেগম পুতুল, সৈয়দপুরের বিধবা সোলেমারসহ শত শত মানুষের বই সমাজ সেবা অফিসে জমা নেওয়ার পর তাদের সবার বই হারিয়ে যায় বলে তারা জানান। এদের সবাই বর্তমানে ভাতা বঞ্চিত। একইভাবে প্রতিবন্ধী জোবেদা আক্তার সুমির বইটিও হারিয়েছেন বলে তার ভাই নুরুল ইসলাম জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বই হারানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা লুৎফুরন্নেসা বেগম পাঠক ডট নিউজকে বলেন অভিযোগ মোটেও সত্য নই। কারো বই গায়েব হয়নি। সরকার ভাতা প্রদানের সিসটেম পরিবর্তন করেছে। এখন বই প্রয়োজন হয় না। অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে যার যার তার মোবাইলে চলে যায়। এখন যেহেতু এনআইডির জন্ম সালের মাধ্যমে বয়স্কভাতার জন্য নির্ধারণ করা হয় সেক্ষেত্রে আগের অনেকে বাদ পড়েছেন। হয়তো তারা এ অভিযোগ করেছে। সবাই পূর্বে বই জমা নিয়ে স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে। যারা বয়স্কভাতার উপযোগী পূর্ণ হবেন (এনআইডি অনুযায়ী) ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তাদের অন্তর্ভূক্ত করার জন্য সমাজ সেবা অধিদপ্তরে তালিকা পাঠানোর মাধ্যমে তাদের বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে।