
চট্টগ্রাম বন্দরে ২০১৫ সালে কোকেনের চালান আটকের বহুল আলোচিত চোরাচালান মামলার চার্জগঠন পিছিয়েছে। আদালত আগামী ১০ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ তৃতীয় মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেন।
চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ গণমাধ্যমেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দের ঘটনায় চোরাচালান মামলায় চার্জগঠনের তারিখ ছিল। আজকে নিয়মিত আদালত বসেনি। অন্য আদালতে শুনানি করা হলে আসামি পক্ষের সময় চাওয়ার কারণে আদালত চার্জ গঠন পিছিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ১০ নভেম্বর ধার্য্য করেছে আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০ সালের ২৯ জুন আলোচিত এ মামলায় চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় চার্জশীট জমা দেয় তদন্ত সংস্থাি র্যাব। অভিযোগপত্রটি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে দাখিল করা হলে পলাতক আসামিদের নাম উল্লেখ করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) ছিল মামলার চার্জ গঠনের তারিখ। মামলা নম্বর বিশেষ ট্রাইবুনাল ২০০/১৭।
অভিযোগপত্রে অভিযুক্তরা হলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।
উল্লেখ্য-২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ হাজার কোটি টাকা মূল্যের কোকেনের চালান আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন বন্দর থানায় কোকেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযোগের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ২০১৫ সালের গত ১২ মে চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আদালতের নির্দেশে কনটেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে ঢাকার বিসিএসআইআর ও বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় এতে তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
এর আগে ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নূর মোহাম্মদকে বাদ দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে মাদক আইনের অংশের অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান। ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর শুনানি শেষে মামলার প্রধান আসামি নুর মোহাম্মদকে বাদ দেয়ায় অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেননি আদালত। একইদিন অভিযোগপত্র প্রত্যাখান করে তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কমকর্তাকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য র্যাব-৭ কে দায়িত্ব দেন আদালত।