ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রামে সম্প্রীতি পুনরুদ্ধারে মহাসমাবেশ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

সারাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের মঠ মন্দির, দেবালয়, প্রতিমা ভাংচুর, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ইসকন নোয়াখালী মন্দিরে সাধু-সন্ন্যাসীদের হত্যাসহ দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির উত্তরণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধার মহাসমাবেশ ও সর্বধর্মীয় পদযাত্রা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে (২৮ অক্টোবর) নগরীর নন্দনকানন চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন), চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি।

সমাবেশে যোগদিতে সকাল থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে সকল ধর্মের লোকজন সমাবেশে জড়ো হতে থাকেন।

.

প্লেকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, জাতীয় পতাকা, গৈরিক পতাকা নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন। তাদের হাতে বিভিন্ন ফেস্টুন প্লেকার্ডে লেখা ছিল, ‘তুমি কে, আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘তুমি যদি মানুষ হও, সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাও’,‘বিপ্লবীদের বাংলায়, মৌলবাদের ঠাঁই নাই’, ‘বাংলায় জন্মেছি, বাংলায় মরবো’, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার মুসলমান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রীস্টান, আমরা সবাই বাঙালি’, ‘সাম্প্রদায়িকতা রুখো, বীর বাঙালি জাগো’, সাম্প্রদায়িকতা যেখানে লড়াই হবে সেখানে’, ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে একসাথে’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’ ইত্যাদি।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইসকনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীপাদ চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী। দুপুর ১২ টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মুল অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। এরপর বৈদিক স্বস্তিবাচনের পরপরই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইস্কন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী এবং দিক নির্দেশনামূলক ও দাবি সম্বলিত বক্তব্য রাখেন ইসকন চট্টগ্রামের বিভাগীয় সম্পাদক শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। মহাসমাবেশে মহাআর্শিবাদক ছিলেন শংকর মঠ ও মিশনের আচার্য শ্রীমৎ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, শ্রী শ্রী তুলসীধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ দেবদ্বীপ মিত্র পুরী মহারাজ, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ড. জিন বোধি ভিক্ষু, পাথরঘাটা ক্যাথলিক চার্চের ফাদার মিস্টার লেনার্ড।

.

ইসকন সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী ও সাংবাদিক বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ অনুপম সেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র মহানগর আহবায়ক ডা.শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক এড. রানা দাশগুপ্ত, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)র ইন্দু নন্দন দত্ত, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, ইসকন কো রিজিওনাল সেক্রেটারি শ্রীপাদ রাধা গোবিন্দ দাস ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ গীতা শিক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এড.তপন কান্তি দাশ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, পুলক খাস্তগীর, শৈবাল দাশ সুমন,নীলু নাগ, রুমকি সেনগুপ্তা, বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুজিত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য, ইস্কন নন্দনকানন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী, ইস্কন কুমিল্লা ও ইস্কন খাগড়াছড়ি মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ সুদর্শন জগন্নাথ দাস ব্রহ্মচারী,মিলন শর্মা, দেবাশীষ আর্চায্য, কাঞ্চন আর্চায্য, রুবেল কান্তি দে,সুমন চৌধুরী, অশোক চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট স্বরূপ পাল,অ্যাডভোকেট রাজীব দাশ বাবু, পিয়াল শর্মা, অজয় দত্ত, জুয়েল আইচ অর্ক প্রমুখ।

.

সমাবেশে ড.অনুপম সেন বলেন, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৭২’র সংবিধান ফিরিয়ে আনতে হবে। সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। আর সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত, হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করলে এ ধরণের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধ হবে।

এম এ সালাম বলেন, এই সম্প্রীতি সমাবেশ প্রমাণ করেছে বীর চট্টলায় সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। হিন্দু, মুসলমি, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান আমরা সকলেই একই রক্তের মানুষ। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। আর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই। আমরা সবাই বাঙালি। সংখ্যালঘু বলা সংবিধান পরিপন্থী। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যারা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৩ বছর যারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছে তারাই সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িত। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু এদশের শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখান করেছে। আমরা সাম্প্রদায়িকা প্রতিরোধে ঘরে ঘরে , পাড়ায় পাড়ায় জনমত গড়ে তুলবো।

আ জ ম নাছির বলেন, অসাম্প্রদায়িক দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় আপনাদের মতো আমিও ব্যথিত। জননেত্রী শেখ হাসিনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। যেখানে সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মানুষের দুঃখের কথা শুনেছেন এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। চট্টগ্রামেও যেখানে ঘটনা ঘটেছে, আমি নিজে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। আপনাদের ক্ষোভ আমি বুঝি, আপনাদের দুঃখ কষ্ট আমি বুঝি। আমি আপনাদের সঙ্গে আগেও ছিলাম, এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো।

বিএনপির মহানগর সভাপতি ডা.শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএনপি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। হামলার ঘটনায় যারা প্রকৃত জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। নিরাপরাধ কাউকে যেন গ্রেফতার করা না হয় বা ঘটনা অন্যদিকে ঘুরিয়ে ফেরা না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। আসুন সকলে মিলে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।

অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা একটি কথা বলতে অভ্যস্ত। বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি আছে তা পৃথিবীর কোন জায়গায় নাই। আমি বলব সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকরণ করে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ খ্রিষ্টানে ভাগ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্ট করেছে। আমরা সরকারি দলের মধ্যে একটা আত্মশূদ্ধি চাই। এ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর ৭১ এর আওয়ামী লীগ কিনা আমরা জানি না। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে আওয়ামীলীগ ক্রমশ ১৯৪৮ সালের আওয়ামী মুসলিম লীগের দিকে চলে যাচ্ছে। ওই আওয়ামী মুসলিম লীগ দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কোন রাজনীতিবিদদের ওপর আমাদের আস্থা নাই। আগামী দেড় দুই বছর আমরা ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের নানাবিধ সংগঠন যুক্তভাবে আমরা মাঠে থাকব। নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। সময় অঅছে দেড় বছর। আমরা মাঠে আছি মাঠে থাকব। মাঠ ছেড়ে কোথাও পালিয়ে যাব না।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print