
ট্যুরিস্ট পুলিশ চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরিদর্শক ও লোহাগাড়া ও সন্দ্বীপ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুদক চট্টগ্রাম ২ অঞ্চলের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাশ মামলাটি করেন। তিনি মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুদক জানায়, ১৯৯০ সালে পুলিশবাহিনীতে যোগ দেন শাহজাহান। সম্পদবিবরণীতে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ২৭ হাজার ৭০০ টাকা। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৭ টাকা। চাকরি যোগদানের পর থেকে তিনি আয় দেখিয়েছেন ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৬ টাকা। ব্যয় দেখিয়েছেন ২৬ লাখ টাকা ১২ হাজার ৪৭৩ টাকা। তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ২৫ লাখ ২৩ হাজার ৮১০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
সম্পদবিবরণী অনুয়ায়ী, তার স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তারের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬১৭ টাকা। এর মধ্যে বৈধ আয় ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৫ টাকা। ব্যয় দেখিয়েছেন ১৩ লাখ ২৮ হাজার ৭৩০ টাকা। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৩ লাখ ২ হাজার ৬৯২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক।
দুদকের দায়ের করা এ মামলায় পুলিশ পরিদর্শক শাহজাহানের বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪৯ লাখ ৩৯ হাজার ১২৬ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। একইসঙ্গে ৭৮ লাখ ১ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদ তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন করে তা স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রুপান্তরের মাধ্যমে ভোগদখলে রাখার অভিযোগ এনে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২), ২৭(১) ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২), ৪(৩) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার অপরাধ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে, মো. শাহজাহান ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তারের বিরুদ্ধে তাদের আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন এবং ভোগদখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (১) ধারায় পৃথকভাবে দুজনকে সম্পদ বিবরণীতে দাখিল করার নির্দেশ দেয় দুদক।
২০১২ সালের ১২ জুন লোহাগাড়া থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। সেখানেই ক্ষমতা অপব্যবহার, গ্রেপ্তার বাণিজ্য ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ মাথায় নিয়ে পরে তিনি বদলি হন সন্দ্বীপে। পরে সেখানেও তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ ওঠে।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে লোহাগাড়ার হারুন নামে এক ব্যক্তির দুদকের প্রধান কার্যালয়ে করা অভিযোগের ভিত্তি ধরে তদন্ত শুরু করে দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২।