
সাতকানিয়ার ইউপি নির্বাচনে ১৫ লাখ টাকা নিয়েও চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন না পাওয়ার অভিযোগ তুলে যুবলীগ নেতার ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হওয়ার পর মিডিয়ার সামনে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমদ।
আজ বুধবার (১২ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন-আমি হয়তো সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারিনি, তবে সবার সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করেছি। সবসময় দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কাজ করার চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য, একটি ঘটনা আমাকে মর্মাহত করেছে। ‘ইতিমধ্যে যে লোক এ কাজ করেছে তা কেন করেছে আমার জানা নেই। সে লোকই আবার গতকাল ফেসবুকে আমার প্রশংসাও করেছে। আমার কাছে ক্ষমাও চেয়েছে। তার প্রতি আমার কোনও অভিযোগ নেই বরং আমি তার নিরাপত্তা নিয়েই ভাবছি। তাকে পেছন থেকে হয়তো কেউ ইন্ধন দিচ্ছে। তবে অন্যায় কাজে আমার কোনও সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবুও আমার কোনও অন্যায় হয়ে থাকলে এবং তা প্রমাণ করতে পারলে আমি যে কোনও ধরনের শাস্তি মাথা পেতে নিতে রাজি আছি। তাই আমি এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ উপস্থাপনা কামনা করবো’।
দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে। এ নিয়ে গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আইন বিষয়ক সহ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. কামাল উদ্দিনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মোছলেম উদ্দীন আহমদ বলেন, আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করিনি। আমি মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি।সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে আমার নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ পোস্ট করলে তার দায় আমি নিব না। আমি মানুষ, রাজনীতি করতে গিয়ে চলার পথে ভুল-ত্রুটি হতেই পারে। তবে এখন যে অভিযোগ উঠেছে, এ ধরনের কোনও অন্যায় কাজ আমি করিনি। গণমাধ্যমে নিউজ দেখে, আমি হতাশ হয়েছি। আমাদের ভুল নেই, সেটা বলবো না। দলীয় কিছু বিষয় আছে, যেগুলো জনগণের সামনে বলা যায় না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড মনোনয়ন দেন। মনোনয়নের ব্যাপারে আমাদের কোনও হাত নেই। আমরা শুধুমাত্র তালিকা পাঠাই। কমপক্ষে তিনজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ৮ উপজেলায় তৃণমূল পর্যায়ে সভা করেছি। প্রত্যেক প্রার্থীর বক্তব্য নিয়েছি, শপথ করানো হয়েছে। মনোনয়ন না পেলেও দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে, এ ধরনের ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। জেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ দপ্তরে তালিকা প্রেরণ করা হয়। কোন কোন ইউনিয়নে ৬/৭ জনের তালিকাও দেয়া হয়েছে এবং আমাদের পাঠানো তালিকার বাইরেও কেন্দ্র হতে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমাদের মনোনয়ন দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ ইদ্রিস, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: নুরুল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ত্রাণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ হায়দার শাহীন, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা: তিমির বরণ চৌধুরী, উপ দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা ডা: আ ন ম মিনহাজুল আবেদীন, দেবব্রত দাশ, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, বোয়ালখালী পৌরসভা মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনাসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।