
বাংলাদেশের লোকগানের অন্যতম পথিকৃৎ ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাট, কিংবদন্তি আব্দুল গফুর হালী ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহে ওয়াইন্না ইলাইহে রাজেউন)।
আজ বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টা ৪৮মিনিটে দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় সঙ্গীতের এই দিকপালের জীবনাবসান ঘটেছে।

মৃত্যুকালে আবদুল গফুর হালীর বয়স হয়েছির ৮৮ বছর। ৬০ বছর ধরে একটানা গান লিখে চলা হালী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাস ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন। গফুর হালীর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আবদুল গফুরের জন্ম ১৯২৯ সালে পটিয়ার রশিদাবাদে। বাবা, আবদুস সোবহান, মা গুলতাজ খাতুন। লেখাপড়া করেছেন রশিদাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জোয়ারা বিশ্বম্বর চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
রশিদাবাদ আরেক সাধকশিল্পী আস্কর আলী পন্ডিতের গ্রাম। আস্কর আলীর গান শুনে বড় হয়েছেন গফুর। ছোটবেলায় তাঁর আধ্যাত্মিক ও মরমি গান গফুরের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। ৫৪ বছর ধরে টানা লিেেছন আবদুল গফুর হালী।
“সোনাবন্ধু তুই আমারে করলি দিওয়ানা” “রসিক তেল কাজলা কোন পাঞ্জাবিঅলা” “মনের বাগানে ফুটিল ফুলগো” “তুঁই যাইবা সোনাদিয়া বন্ধু মাছ মারিবার লাই,‘অ শ্যাম রেঙ্গুম ন যাইও” “বানুরে অ বানু আঁই যাইমুব রেঙ্গুম শরত তোঁয়ার লাই আইন্যম কী” কিংবা মাইজভান্ডরী গান- দেখে যারে “মাইজভান্ডারে, কতো খেলা জানরে মাওলা, মাইজভান্ডারে কি ধন আছে” ইত্যাদি শত শত কালজয়ী গানের রচিয়তা আবদুল গফুর হালী।

তাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘মেঠো পথের গান’। ‘এ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটিতে কিংবদন্তি লোকশিল্পী আবদুল গফুর হালীর জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে, ছবিটি ৩৯ মিনিটের। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন শৈবাল চৌধুরী।
আবদুল গফুর হালী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও মাইজভান্ডারী গানের কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। শেফালী ঘোষ, সন্দীপন, শিরিনসহ অনেক শিল্পীর উত্থান গফুর হালীর গান গেয়ে। হালীর গান নিয়ে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাগ্রন্থ।