
কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম মহানগরী সংলগ্ন জেলার সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ৫ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র্যাব-৭।
গতকাল শনিবার রাতে অভিযান পরিচালনাকালে র্যাবের সাথে শীর্ষ সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান প্রকাশ মশিউর বাহিনীর সাথে র্যাবের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
উদ্ধারকরা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, ১০ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ০১ টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ০১ টি ধারালো ছোরা এবং মোট ২২ রাউন্ড গুলি। এছাড়াও সন্ত্রাসী আস্তানা থেকে মিলিটারী গেজেট, মিলিটারী পোশাক, মিলিটারী বাইনোকোলার ও অবৈধ ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।

অভিযানে রফিকুল ইসলাম মালু (৪১) খুলনার অন্ধ জামাল (৪২), লালমনিরহাটের সিরাজুল ইসলাম (৩৪) মো. হাসান (৩৫) এবং বাঁশখালীর মিজানুর রহমান কদর প্রকাশ চশমা মিজান (৩৪) আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নূরুল আবছার। তিনি বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্র এবং বিপুল পরিমান বিভিন্ন ফাইল ও কাগজপত্র যাছাই বাছাই চলছে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ডিসেম্বর ভোরে জঙ্গল ছলিমপুর থেকে র্যাবের হাতে আটক হয় ২৭ মামলার আসামি, ছিন্নমূল সংগঠনের নেতা ও চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান। এ সময় তার কাছে থেকে ২ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন সহ ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ওয়ান শুটারগান, ২টি এলজি, ১টি দুনলা বন্দুক ও ১৩ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। তার অবর্তমানে তার ছেলে মহিরুল হাসান ওরফে শিবলী ছিন্নমূল জঙ্গল সলিমপুর আশেপাশের এলাকাসহ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বর্তমানে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
র্যাবের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নূরুল আবছার জানান, গোপন সংবাদে শনিবার রাতে র্যাব জঙ্গল সলিমপুরে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন। ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চালানো শুরু করতেই মশিউরের ছেলে সন্ত্রাসী শিবলুর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী র্যাবকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে র্যাবের উপর অতর্কিত আক্রমন করে র্যাবের কর্মকান্ডে বাধা প্রদানসহ গ্রেফতারকৃত আসামীদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে পাহাড়ী এলাকা থেকে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে দূর্গম পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। নিজেদের জীবন ও অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষার্থে র্যাবও বিভিন্ন অস্ত্র দ্বারা ১২৯ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। র্যাব এলাকাটিকে ঘিরে রাখে পরবর্তীতে অধিক ফোর্স নিয়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশী শুরু হয়। এসময় মশিউর বাহিনীর প্রধান (মশিউরের ছেলে) মহিরুল হাসান ওরফে শিবলীসহ একাধিক সন্ত্রাসী দুর্গম পাহাড়ের মধ্যে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে ৫ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।
উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্ররের ভিত্তিতে সীতাকুণ্ড থানায় অস্ত্র মামলা ও র্যাবের উপর আক্রমন, সরকারী কাজে বাধা প্রদান, একটি র্যাব এসোল্ট মামলা ও মিলিটারী উপকরণ রাখা ও অবৈধভাবে ধাতব মুদ্রা রাখায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।