
তৈরী পোশাক শিল্পের পণ্যে নিয়ে এই প্রথমবারের মতো ১১ শতাধিক একক কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি ইতালি যাচ্ছে এমভি সোঙ্গা-চিতা নামে একটি জাহাজ।
আগামীকাল সোমবার (৭ ফেব্রয়ারী) ৫০টি গার্মেন্টসে তৈরি পোশাকখাতের প্রায় ১১০০ একক কন্টেইনার নিয়ে ইতালির রেভেনা বন্দরে যাচ্ছে জাহাজটি। এর আগে শনিবার (৫ ফেব্রয়ারী) সাড়ে ৯শ খালি কন্টেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর ফেলে জাহাজটি।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, এমভি সোঙ্গা চিতা জাহাজটি আমদানি পণ্যবোঝাই সাতটি কনটেইনার এবং ৯৪৫ একক খালি কনটেইনার নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি রওনা হয় ইতালির বন্দর থেকে। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে জাহাজটি পৌঁছতে সময় লেগেছে মাত্র ১৯ দিন।

বাংলাদেশ-ইতালি সরাসরি কনটেইনার জাহাজে পোষাক পণ্য রপ্তানির মধ্য দিয়ে এদেশের পোষাক শিল্পেন জন্য নতুন দিগন্তের সুচনা হল বলে মনে করছেন ব্যবসায়িরা। এর ফলে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’র রফতানির পোশাক ইউরোপ পৌঁছাতে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে, খরচ কমবে ৩০-৪০ শতাংশ। যা আগে সময লাগতো ৪০ থেকে ৪৫দিনের মতো।
বিজিএমইএ সুত্র জানায়, দেশের তৈরি পোশাকের বড় অংশের ক্রেতা ইউরোপের নানা দেশ। দেশের মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশই যায় সেখানকার দেশগুলোতে। এতদিন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ফিডার জাহাজে কলম্বো, পোর্ট কালাং, সিঙ্গাপুরসহ নানা ট্রানজিট বন্দর ঘুরে, তারপর মাদার ভেসেলে করে এই পণ্য রপ্তানি হতো নির্দিষ্ট গন্তব্যে। এতে ইউরোপ পৌঁছতে সময় লাগতো অন্তত দেড়মাস।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডিমরাল এম শাহজাহান বলেন, শনিবার ইতালি যাওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে জাহাজটি। কনটেইনার ভর্তি করে আগামীকাল সোমবার রওনা হবে এ জাহাজ। দেশ থেকে প্রথম কনটেইনার জাহাজ ইউরোপে যাচ্ছে এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। ইউরোপে নৌবাণিজ্যের নতুন দুয়ার উম্মোচন হওয়ায় তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বিড়ম্বনা কমবে।

বিজিিএমইএ সসূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে প্রথম সরাসরি জাহাজটি যাবে ইটালির রেভেনা বন্দরে৷ সেখান থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের ক্রেতারা যার যার দেশে পণ্য নিয়ে যাবেন৷ ফলে আগের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ সময় লাগবে৷ খরচও অনেক কমে যাবে৷ মাসে দুইবার যাবে জাহাজটি।
জানতে চাইলে বিজিএমইএ চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইতালি কনটেইনার জাহাজ যাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। তিনটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান মিলে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি জাহাজে করে তৈরি পোশাক নেয়ার এই ব্যবস্থা করেছে৷ এখন ইউরোপের অন্যান্য দেশও আগ্রহী হবে৷ এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ৷ আমরাও চাচ্ছিলাম মাদার ভ্যাসেলে করে পোশাক পাঠাতে৷ আমাদের জন্য অনেক বড় সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল৷
এ উদ্যোগকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলছে ব্যবহারকারীরা। আর সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকা রুটে জাহাজ চলাচলে উৎসাহ দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য যে, গত অর্থবছরে তৈরি পোশাকখাতে ৩১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। আর এর ৬০ ভাগের ক্রেতাই ইউরোপের নানা দেশ।