প্রার্থীর বসতঘরে হামলা, পাল্টাপাল্টি হামলা-মামলা, সংঘর্ষের সময় এক ব্যক্তির মৃত্যু, গোলাগুলি ও নানা ধরনের সহিংসতাসহ সব কিছু ছাপিয়ে শঙ্কার মধ্যে আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে সপ্তম ধাপে সাতকানিয়ার ১৬ ইউনিয়নের নির্বাচন।
এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ১৪৫ কেন্দ্রের ৬৭১টি বুথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। ভোট গ্রহণের জন্য ২ হাজার ১৫৮জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা) দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচনের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এনিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের।
নির্বাচনে ১৩৫টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সেরেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রসহ সবগুলো কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১৪শ সদস্য।
এর আগে শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় মাঠে নেমেছে বিজিবি ও পুলিশ।
সাতাকনিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শিবলী নোমান বলেন, নির্বাচনে ১৪৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৭টি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ, ৮৮টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১০টিকে সাধারণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ১৬ ইউনিয়ন পরিষদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বচানী প্রচারণাকে ঘিরে একজনের প্রাণহানিসহ সংহিসতার খবর পাওয়া গেছে। যেহেতু বেশিরভাগই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আশা করছি ভোটগ্রহণের দিন কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটবে না।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণের ব্যাপারে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাচনী এলাকায় বিজিবি ও পুলিশের টহল শুরু হয়েছে। এছাড়াও ভোটের দিন ১৬ টি ইউনিয়নে ১৬ জন ম্যাজিট্রেট থাকবেন। এছাড়াও দুই প্লাটুন বিজিবি ও দুই প্লাটুন র্যাব এবং এক প্লাটুন ব্যাটালিয়ন আনসার মাঠে থাকবেন।
গত ২৯ ডিসেম্বর সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। ২৩ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর প্রচারণা শুরু হলে এরই মধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। উপজেলার খাগরিয়া, আমিলাইশ, সোনাকানিয়া, ধর্মপুর ইউনিয়নে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক আহত ও ১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
এরই মধ্যে ৪ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এই ৪ ইউনিয়নে মেম্বার পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সপ্তম ধাপে সাতকানিয়া ইউনিয়ন, ছদাহা ইউনিয়ন, পুরানগড়, বাজালিয়া, ধর্মপুর, কালিয়াইশ, কেঁওচিয়া, ঢেমশা, মাদার্শা, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, নলুয়া, খাগরিয়া, চরতি, পশ্চিম ঢেমশা ও সোনাকানিয়া ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
