
চট্টগ্রামের সাংবাদিক পরিচয়ধারী ভয়ঙ্কর প্রতারক ও চাঁদাবাজ আজগর আলী মানিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার রাজধানীর সিদ্দেশ্বরী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া টিভি কথিত চ্যানেল সিটিজি ক্রাইম টিভি ও অনলাইন পত্রিকার মালিক ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক চাঁদাবাজকে র্যাব-৪ এর একটি টিম গ্রেফতার করেছে।
ভুয়া সাংবাদিক মানিক চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া গ্রামে রফিক আহমদের ছেলে।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক পাঠক ডট নিউজকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা মহানগরীর সিদ্দেশ্বরী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ০৩ টি ভূয়া টিভি চ্যানেল ও ০১ টি ভূয়া পত্রিকার মালিক ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী মোঃ আলী আজগর মানিক (৪৮) জেলা- চট্টগ্রাম কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। গ্রেফতারের পর সে স্বীকার করেছে এ পর্যন্ত সাংবাদিক বানানোর নামে অনলাইন টিভি ও অনলাইন পত্রিকার কার্ড বিক্রি ও বিভিন্ন রাজৗনতিক ব্যবসায়ির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামী আলী আজগর মানিক এর উত্থানঃ
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী এ ধরনের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি স্বাক্ষরজ্ঞানহীন অথচ তিনি একটি দুটি নয় বরং ৩ টি টেলিভিশন চ্যানেলের চেয়ারম্যান যেগুলোর নাম যথাক্রমে সিটিজি ক্রাইম টিভি, সিটিজি টিভি ও বার্তা টিভিসহ আই বার্তা নামে একটি দৈনিক পত্রিকারও সম্পাদক। উদ্দেশ্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে সাংবাদিক কার্ড বিক্রি করা।
চট্টগ্রামে উত্থান হওয়া এই প্রতারক নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, প্রতারণা, চাঁদাবাজীসহ অন্তত ১০ টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী। আলী আজগর মানিক একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে চট্টগ্রামে টিকতে না পেরে গত ২ বছর ধরে পালিয়ে ঢাকার অবস্থান করছেন। পলাতক অবস্থায়ই সম্পূর্ণ ভুয়া ও অনুমোদনহীন ৩ টি টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনুমোদনহীন নামসর্বস্ব একটি ভুয়া দৈনিক পত্রিকাসহ ৪ টি মিডিয়ায় সাংবাদিক বানানোর নামে সারাদেশের অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমানের মোটা অংকের অর্থ। মূলত এটিই তার প্রধান আয়ের উৎস।
ভিডিও দেখুন-
ভুয়া মানিকের অপরাধের কৌশলঃ
আসামী আলী আজগর মানিক উক্ত টিভি চ্যানেল ও ভুয়া দৈনিক পত্রিকা খুলে মিডিয়ার জন্য সাংবাদিক বানানোর কথা বলে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেয়। এতে বিভিন্ন বেকার ও নিরীহ লোকজন তার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হয় এবং তার সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে আলী আজগর মানিক তাদের জানায় যে সাংবাদিক হতে হলে প্রথমে তাকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ৪/৫ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। সে কখনো সরাসরি কারো সাথে দেখা করতো না এবং তার অফিস ও বাসার ঠিকানা কাউকে দিতো না। তার কথা বিভিন্ন লোকজন সরল মনে বিশ্বাস করে সাংবাদিক হওয়ার আশায় তাকে ৪/৫ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতো। টাকা পাওয়ার পর ধৃত আসামী আলী আজগর মানিক উক্ত ব্যক্তিদের সাথে আর কোন যোগাযোগ রাখতো না। এভাবে সে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার উদ্দেশে অসংখ্যা বেকার ও নিরীহ লোকজনকে সাংবাদিক বানানোর কথা বলে তাদের নিকট হতে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তা আত্মসাত করে আসছে।
এছাড়া ধৃত আসামী আলী আজগর মানিক চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ লোকজন, বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সমাজের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নামে ভ‚য়া এবং বানোয়াট সংবাদ প্রচারের ভয়-ভীতি প্রদান করে তাদের নিকট হতে বিভিন্ন মোটা অংকের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করে তা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। আসামী আলী আজগর মানিক এর বিভিন্ন নারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া সে একাধিক বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল। যে মেয়েকে তার পছন্দ হতো তাকেই সে বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্তক্ত করে। তার কুপ্রস্তাবে কোন মেয়ে রাজি না হলে সে তাদের নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা লিখে এবং বিভিন্ন সময় তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিত মর্মে ধৃত আসামী স্বীকার করে। এই পর্যন্ত আসামী আলী আজগর মানিক বিভিন্ন লোকজনদের নিকট হতে প্রতারণা মূলক ভাবে অনুমানিক ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে মর্মে জানা যায়।
আলী আজগর মানিকের অপরাধের কৌশল বিষয়ে র্যাব জানায়, টিভি চ্যানেল ও ভুয়া দৈনিক পত্রিকা খুলে মিডিয়ার জন্য সাংবাদিক বানানোর কথা বলে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেয়। এতে বিভিন্ন বেকার ও নীরিহ লোকজন তার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হয় এবং তার সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে আলী আজগর মানিক তাদের জানায় যে সাংবাদিক হতে হলে প্রথমে তাকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ৪/৫ হাজার টাকা পাঠাতে হবে।
র্যাব আরও জানান, সে কখনো সরাসরি কারো সাথে দেখা করতো না এবং তার অফিস ও বাসার ঠিকানা কাউকে দিতো না। তার কথা বিভিন্ন লোকজন সরল মনে বিশ্বাস করে সাংবাদিক হওয়ার আশায় তাকে ৪/৫ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতো। টাকা পাওয়ার পর ধৃত আসামী আলী আজগর মানিক উক্ত ব্যক্তিদের সাথে আর কোন যোগাযোগ রাখতো না। এভাবে সে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার উদ্দেশে অসংখ্যা বেকার ও নিরিহ লোকজনকে সাংবাদিক বানানোর কথা বলে তাদের নিকট হতে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তা আত্মসাৎ করে আসছে।
এছাড়া ধৃত আসামী আলী আজগর মানিক চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ লোকজন, বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সমাজের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নামে ভুয়া এবং বানোয়াট সংবাদ প্রচারের ভয়-ভীতি প্রদান করে তাদের নিকট হতে বিভিন্ন মোটা অংকের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করে তা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে বলেও র্যাব জানিয়েছে।
র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, আসামী আলী আজগর মানিকের বিভিন্ন নারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া সে একাধিক বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল। যে মেয়েকে তার পছন্দ হতো তাকেই সে বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্তক্ত করে। তার কুপ্রস্তাবে কোন মেয়ে রাজি না হলে সে তাদের নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা লিখে এবং বিভিন্ন সময় তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিত মর্মে ধৃত আসামী স্বীকার করে।
এই পর্যন্ত আসামী আলী আজগর মানিক বিভিন্ন লোকজনদের নিকট হতে প্রতারণা মূলক ভাবে অনুমানিক ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে বলে র্যাব জানতে পেরেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
ভিডিওতে শুনুন মানিকের অপকর্ম:
চাকরি দেয়ার নামে তরুণীদের ধর্ষণ করতো মানিক:
গত বছরের ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ একটি রিপোর্টের বিষয়ে ফেইসবুক পেইজ “সিটিজি ক্রাইম টিভি ডট কম” এর ঢাকা পল্টনের অফিসে যান ভুক্তভোগী তরুনী, জারা হায়াত। এরপর থেকে চ্যানেলের কথিত চেয়ারম্যান আজগর আলী মানিক নানাভাবে চাকরির প্রলোভন দিতে থাকে বলে অভিযোগ মেয়েটির। জারা হায়াত জানায়, সিটিজি ক্রাইম টিভি ডট কম প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার পর থেকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব ও যৌন হেনস্তা করতে থাকে আজগর আলী মানিক। গত ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন শেষে সবাইকে পাঠিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে অর্থের বিনিময়ে কুপ্রস্তাবে রাজি হওয়ার অনুরোধ জানালে, ওই তরুণী প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়ে, মানিকের অফিস থেকে নিজের সম্মান বাঁচিয়ে চলে যায়। এরপর চতুর মানিক ফোনে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে।
আজগর আলী মানিকের ক্ষমা প্রার্থনার একটি অডিও রেকর্ড আমাদের হাতে এসেছে। মানিকের সাথে জারা হায়াতের কথোপকথনের ওই রেকর্ড তুলে ধরা হল:
আজগর আলী মানিক: “মানুষের ভুল হয়, শয়তানেরও ভুল আছে, একটা কথা হয়তো বলে ফেলেছি। আমার পাশে থাকবা, আমার প্রতিষ্ঠানের পাশে থাকবা।”
জারা হায়াত:“কিভাবে স্যার আপনার পাশে থাকবো। আপনার তো স্যার আজকে যা দেখলাম, আপনার পাশে কিভাবে থাকবো বলেন।”
আজগর আলী মানিক: “শুনো, এটা এখন তুমি বললে গুনাহ হবে। মানুষে ভুল করে, শয়তানে করেনা। এটার জন্য সরি বলে ফেলছি, খালাস। এরপর আর কিছু নাই। সরি, সরি আমি একজন তোমার শিক্ষক হইয়া সরি বলছি।”
জারা হায়াত: “ক্ষমা তো চাইছেন স্যার, আপনি যে অন্যায়টা করছেন, এটাতো আরও অনেকের সাথে করছেন, স্যার।”
আজগর আলী মানিক:“আচ্ছা, ঠিক আছে, ঠিক আছে, ভুল হইছে, এটা ভুল হইছে।
জারা হায়াত: “স্যার, আপনি একজন ক্রাইম চ্যানেলের মালিক হইয়া, চেয়ারম্যান হইয়া..এধরণের ক্রাইম করেন স্যার আপনার লজ্জা লাগে না? স্যার”।
আজগর আলী মানিক: ভুল হইছে যে, ভুলে…
জারা হায়াত জানান, উক্ত ঘটনার পর ২২ ফেব্রুয়ারি পল্টন থানায় যান তিনি। কিন্তু থানায় উপস্থিত হওয়ার কিছু সময় আগেই তার নামে সাধারণ ডায়েরী করে আজগর আলী মানিক। মামলা করার ইচ্ছে থাকা সত্বেও, নানা তালবাহানার পর মানিকের বিরুদ্ধে তার জিডি নেয়া হলেও, উক্ত থানার এস আই কামরুলের পরামর্শে আপোষ করতে বাধ্য হন তিনি।
এ বিষয়ে এস আই কামরুল জানান, ভুক্তভোগী ওই মেয়ে আবারো থানায় অভিযোগ দায়ের করলে আজগর আলী মানিককে আইনের আওতায় আনা হবে। সচেতন মহল মনে করেন, উক্ত এস আই কেন আপোষে বাধ্য করেন, তাহা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন প্রয়োজন। কারণ তিনি একজন লুচ্ছা মনের মানুষকে, প্রশ্রয় দিয়েছেন। এ ধরনের গুটিকয়েক কর্মকর্তার কারণে পুলিশ বাহীনির বদনাম হচ্ছে।
এর আগেও আজগর আলী মানিক চট্টগ্রামে তার কথিত ফেইসবুক চ্যানেলে চাকরির প্রলোভনে বিভিন্ন নারীকে কুপ্রস্তাব দেয়। এমনকি সরল মেয়েদের কিভাবে ফাঁদে ফেলে, সেই বর্ণনাও পাওয়া যায় একটি অডিও রেকর্ড থেকে।
আজগর আলী মানিক: আমার মন মানসিকতা ভালোনা, তুমি ডাকলে মন মানসিকতা ভালো হবে আরকি। এসময় ফোনের অপর প্রান্তে থাকা নারী তার কাছে জানতে চায়, সে কিভাবে তার প্রতিষ্ঠানের মেয়েকে ফাঁদে ফেলেছে? ..উত্তরে আজগর আলী মানিক বলেন, “চাকরির অফার দিছি আমি, পেপারে বিজ্ঞপ্তি দিছি না! তো চাকরি করতে আসছে। আমি তো লুইচ্ছা মানুষ। ঐ তো তখন আমার চোখে লাখছে, আমি এপয়েন্টমেন্ট লেটার দিলাম, চাকরি করতেছে, দেড় দুই বছর আগের কথা বুঝো না? কিন্তু আমি একবার টাচ করছিলাম। বাকীটা খুব কষ্ট হইছে।”
এছাড়াও আরও অনেক নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছে আজগর আলী মানিকের বিরুদ্ধে। অনেকেই ভয়ে ও সম্মানের দিকে তাকিয়ে মুখ খুলতেও পারছে না। সে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে মেয়েদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে স্ট্যাটাস দিতো আজগর আলী মানিক।
যেভাবে আটক হয় ভুয়া সাংবাদিক মানিক:
আজগর আলী মানিক। করেননি ক্লাস এইট পাশও!! অথচ তিনি একটি দুটি নয় বরং ৩ টি টেলিভিশন চ্যানেলের চেয়ারম্যান যেগুলোর নাম যথাক্রমে সিটিজি ক্রাইম টিভি, সিটিজি টিভি, বার্তা টিভি! পাশাপাশি আই বার্তা নামে একটি দৈনিক পত্রিকারও সম্পাদক তিনি। পৈতৃক সম্পত্তির মতন টিভি চ্যানেলগুলো স্ত্রী মেয়ে ও ছেলেদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই, ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে সাংবাদিক কার্ড বিক্রি!
এ বিষয়ে গত দেড় মাস আগে বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আজগর আলী মানিকের ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু করে জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অগ্রযাত্রা’র অপরাধ অনুসন্ধান বিভাগ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এর সাংবাদিকরা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। চট্টগ্রামে উত্থান হওয়া এই প্রাতারক নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানী, প্রতারণা, চাঁদাবাজীসহ অন্তত ১০ টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী।
একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে চট্টগ্রামে টিকতে না পেরে গত ২ বছর ধরে পালিয়ে আছেন ঢাকার কোন একটি অজ্ঞাত স্থানে। আর পলাতক অবস্থায়ই সম্পূর্ণ ভুয়া ও অনুমোদনহীন ৩ টি টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনুমোদনহীন নামসর্বস্ব একটি ভুয়া দৈনিক যার নাম আই বার্তা এই ৪ টি মিডিয়ায় সাংবাদিক বানানোর নামে সারাদেশের অন্তত ৩ শতাধিক মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন জনপ্রতি ৩-৫ হাজার টাকা করে। এবং তার এ প্রতারণা অব্যাহত রেখেছেন অদ্যবধি। এবং এটিই তার প্রধান আয়ের উৎস। পল্টনের একটি অফিসের ঠিকানা বললেও অগ্রযাত্রা’র অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা সে ঠিকানায় কোন অফিস পায়নি।
তার অপকর্মের তথ্য প্রমাণ হাতে পাবার পর তার অবস্থান নিশ্চিত হতে অগ্রযাত্রা’র ছদ্মবেশী কয়েকজন সাংবাদিক প্রতারক আজগর আলী মানিকের ভুয়া চ্যানেলগুলোতে সাংবাদিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে সাংবাদিক হবার আবেদন করে। তিনি আমাদের নিরাশ করেননি। সবাইকে বানিয়ে দিয়েছেন সাংবাদিক। এবং তিনি কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখতে চাইলেন না। চাইলেন ৩০০০ টাকা। টাকা দিতে রাজীও হলাম। যদি তার দেখা পাওয়া যায়! কিন্ত না তিনি টাকা নেবেন বিকাশে এবং সাফ জানিয়ে দিলেন অফিসে আসার কোন সিস্টেম নেই৷ অনুসন্ধানে জানা গেছে মূলত তার কোন অফিসই নেই,অজ্ঞাত স্থানে বাসা নিয়ে সে বাসারই কোন একটি কক্ষকে অফিসের মতন সাজিয়ে নিয়মিত ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে জানান দেন এটি নাকি তার পল্টন অফিস। অবশেষে আমরা প্ল্যান পরিবর্তন করি। আমরা জানতে পারি মেয়েদের প্রতি ভীষণ দূর্বল এই আজগর আলী মানিক। তাই এবার ঝুঁকি নিলো অগ্রযাত্রা’র একজন নারী সাংবাদিক। ছদ্মবেশে চাকরি চাইলো তার চ্যানেলে। কিন্ত একি,,! প্রথম চ্যাটিংয়েই আলী আজগর মানিক ছদ্মবেশী ঐ নারী সাংবাদিককে দিয়ে বসলেন কু প্রস্তাব। পাঠালেন নিজের গোপনাঙ্গের ছবি! একাকী সময়ে বাসায় নিয়ে আসার কথাও বলেন। কৌশলে আমাদের নারী সাংবাদিক নিয়ে নিলো তার বাসার ঠিকানা। আমাদের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের ছদ্মবেশী আরেকটি টিম সে ঠিকানা যাচাই করে প্রতারক আজগর মানিকের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। অত;পর আমাদের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত সকল তথ্য ও প্রমাণ পুলিশ ও র্যাব সদরদপ্তরে পাঠানো হয়। আমাদের দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই শেষে সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারী ভোরে তাকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার একটি বাসা থেকে আটক করে র্যাবের একটি আভিযানিক দল।