চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকার দলীয় লুটেরা মুনাফাভোগী সিন্ডিকেট চক্রের দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। মহামারী করোনায় জনজীবন আজ বিপর্যস্থ। তার উপর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণ চোখে ‘সরষে’ ফুল দেখছে। দেশে আড়াই কোটি মানুষ বেকার হয়ে পরেছে এবং তিন কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে গেছে। শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষদের মজুরি-বেতনও বাড়েনি। এমতাবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ায় দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা তথা তাদের প্রকৃত আয়ের ক্ষেত্রে বিপর্যয়কর ধ্স নেমেছে। মানুষের জীবন যন্ত্রণা লাঘব করার বদলে সরকার নিজেই গ্যাস, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম আরও দ্বিগুণ করার পাঁয়তারা করছে।
তিনি আজ শুক্রবার(২৫ ফেক্রয়ারি) বোয়ালখালী উপজেলার ৫নং সারোয়াতলী ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি আরোও বলেন, সরকারদলীয় মন্ত্রী এমপিগণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে জনগণের নয় বরঞ্চ সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের ক্রয়ক্ষমতা ও সম্পদ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণের সম্পদ লুটপাট করে তারা ঘরে ঘরে ব্যাংক গড়ে তুলেছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। সরকারি দলের অংগসংগঠনের চুনোপুঁটি নেতারা আঙ্গুল ফুলে একেকটা বটগাছ হয়ে গেছে। সরকারের দুর্নীতি ও দু:শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপির চলমান আন্দোলন সংগ্রামকে রুদ্ধ করতে সরকার দমন-পীড়ন ও ‘ভয়ের রাজত্ব’ কায়েম করে রেখেছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ও আমলাতন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশে ফ্যাসিস্ট ধরনের দুঃশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে একটি প্রহসনে পরিণত করে তাকে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট ও দুর্নীতিবাজ সরকারের পতন ছাড়া দ্রব্যমূল্য ও জনদূর্ভোগ শেষ হবে না। এ অবস্থার অবসানের জন্য জনগণকে আজ ঘুরে দাঁড়াতে হবে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দল, মত, জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বোয়ালখালীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের কালুরঘাট সেতু সরকারের প্রতিশ্রæতির মধ্যে সীমাবদ্ধ উল্লেখ করে আবু সুফিয়ান বলেন, দীর্ঘ এক যুগের বেশী সময় ধরে ক্ষমতায় থেকেও সরকার কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সরকারদলীয় জনপ্রতিনিধিগণ প্রতিশ্রæতি দিলেও আজও কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নের অগ্রগতি নেই। শত বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ সেতুটি দিয়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। এছাড়া একমুখী সেতু হওয়ায় এর দুই পাড়ে আটকে পড়া যানবাহনের জট নিত্যদিনের বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে জনগণকে মিথ্যা প্রতিশ্রæতি দিয়ে আসলেও সেতু নির্মাণ নিয়ে সরকারের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য প্রতিদিন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার এর লাগাম টেনে না ধরে বরং এই দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির পেছনে যারা জড়িত তাদেরকে উৎসাহিত করছে। ফলে প্রতিনিয়ত চাল ও ডাল থেকে শুরু করে খাদ্যদ্রব্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আজকে বহু মানুষ অনাহারে থাকছে, অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। অথচ সাধারণ জনগণের সমস্যা সমাধানে সরকার উদাসীন। ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জণগণকে সাথে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমান এর নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে হটাতে হবে। তখন এদেশের জনগণ দ্র্র্র্র্র্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সকল সমস্যার সমাধান পাবে।
৫নং সারোয়াতলী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ইঞ্জি. এস.এম তারেকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আরিফ চৌধুরী ছোটনের পরিচানায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন লিপু, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, যুগ্ম আহবায়ক আবদুল করিম, বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আহমেদুল আলম,আইয়ুব মেম্বার,মেহেদী হাসান সুজন, উপজেলা বিএনপি নেতা মুছা আমেরী, মোঃ গাজি, মোঃ জহির, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি মোঃ ইসমাইল, যুগ্ম সম্পাদক সাইম উদ্দীন টিটু, উপজেলা বিএনপির সদস্য মোস্তফা কামাল কালু, মো কফিল উদ্দীন,মো মমতাজ, মো আজগর, মো মনছুর,মো মফিজ, মো: জসীম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শহিদুল্লাহ মানিক, যুবনেতা রাশেদ, শাকিল,রুবেল, ছাত্রনেতা পারভেজ ,জিকু, হিমু, রিয়াদ।
সম্মেলনে এস এম তারেককে সভাপতি , মো: জহির আহমেদকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আরিফ চৌধুরি ছোটন কে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১জন বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
