
মোবাইলে ছোট ভাই গোলাম মাওলানা প্রিন্সের সাথে কথা বলতে বলতেই রাশিয়ার ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় নিহত হন ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে আটকে থাকা বাংলাদেশী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধ’ থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান আরিফ। আরিফ ৬মাস আগে বাড়ি ছুটিতে আসছিলেন। এক মাসের ছুটি শেষে আবার জাহাজে চলে যায়।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে আরিফ। চার ভাই বোনদের মধ্যে আরিফ ছিল মেঝ। আট বছর ধরে এই জাহাজে কর্মরত ছিলেন আরিফ। তিনি ৪৭ ব্যাচের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে নিহত আরিফ বাড়ি গিয়ে দেখা যায় কান্না করতে করতে স্বজনরা মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিবেশীরা তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। এরইমাজে কথা আরিফের ছোট ভাই ছোট ভাই গোলাম মাওলানা প্রিন্সের সাথে। আরিফ বলেন, আমার সাথে ভাইয়া কথা বলছিল এমন সময় একটি বিকট শব্দ হয়ে ফোন কল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি আরিফ ভাইয়া নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়ে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। জাহাজটিতে ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন। জাহাজটি বর্তমানে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা আছে। সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজটি। এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।