
চট্টগ্রাম মহানগরীতে মশা উৎপাতে খোদ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বিড়ম্বনায় আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, দিনেও মশা রাতেও মশা, অস্বীকার করছি না। মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় আছি।
আজ বুধবার (২৩ মার্চ) আন্দরকিল্লাস্থ নগর ভবনে মেয়র পদে এক বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। পানি যাচ্ছে না। কয়েকদিন আগে পরিদর্শনে গিয়ে খালে একটি ঢিল ছুঁড়ে মারলাম, কয়েক হাজার মশা বেরিয়ে এলো। তিনদিন আগে স্প্রে করেছিল। দিনেও মশা, রাতেও মশা, অস্বীকার করছি না। জলাবদ্ধতা প্রকল্প শেষ না হলে মশা নির্মূল সম্ভব হবে না। মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় আছি।
এছাড়া খাল-নালা অবৈধ দখলকারীরা যত প্রভাবশালী হোক না কেন ছাড় দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মেয়র।
রেজাউল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে আন্তরিক। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে প্রকল্প বাস্তবায়ের জন্য সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে বৃহৎ ২৪৯১ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দিয়েছেন। যা দিয়ে ৭৬৯ কি.মি সড়কের উন্নয়ন, ২২ টি কালভার্ট, ১০ টি গোল চত্বর, ১৪ টি ব্রীজ, ৩৮ ফুটওভার ব্রীজ, ১টি ওভারপাস নির্মাণ করা যাবে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নগরে মশার উৎপাত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের জন্য অনেক খালে বাঁধ দেয়া হয়েছে। সেখানে পানি জমে আছে। ফলে মশার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় আছি, সেটা অস্বীকার করবো না। কয়দিন আগে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটা খালে পরিদর্শনে গিয়ে নিজে বিব্রত হয়েছি। বদ্ধ পানিতে ঢিল ছুঁড়ে মারার পর দেখলাম কোটি কোটি মশা উড়ছে। দিনেও মশা, রাতেও মশা, তা অস্বীকার করবো না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে জলাবাদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা নিয়ন্ত্রণ হবে না।
মেয়র জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪৩৬ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীকে আনুতোষিকের ১১ কোটি ৮৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টাকা, ঠিকাদারদের ৮৪ কোটি ৫৮ লাখ ২৯ হাজার ৩৫০ টাকা, সড়কবাতির বকেয়া বিল ২ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ২০৩ টাকা, চসিকের বিভিন্ন স্থাপনার বকেয়া বিল ৬ কোটি ৪৫ লাখ ৫১ হাজার ৪২০ টাকা এবং নেজারত শাখার বকেয়া ১ কোটি ১ লাখ ৬১ হাজার ৪১২ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
চসিকের ৪১ ওয়ার্ডের ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ জন নিবন্ধিত নগরবাসীকে কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে। ২১ লাখ ৬৪ হাজার ৩২১ জনকে প্রথম ডোজ এবং ১ লাখ ২১ হাজার ৭১ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
নিজেকে কতটা সফল মনে করেন? এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, সাফল্য-ব্যর্থতা নিজে পরিমাপ করতে পারবো না। সেটা জনগণ করবে। তবে আমি নিরন্তর চেষ্টা করে গেছি। আমি ১ হাজার কোটি টাকার দেনা ও নানাবিধ সমস্যা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সেখান থেকে বের হয়ে চট্টগ্রাম নগরীকে নান্দনিক নগরী হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করতেছি।
রেজাউল করিম চৌধুরীর বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনবলের সংকট রয়েছে সেটা থেকে কাটিয়ে উঠতে আস্হায়ী কর্মকর্তা – কর্মচারীদের দীর্ঘদিন স্হায়ীকরণে মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। এই চট্টগ্রাম নগরী আমার আপনার সকলের। আমরা যদি সবাই মিলে সিটি করপোরেশনকে একটু সহযোগিতা করি তাহলে এই চট্টগ্রাম নগরী দিনদিন উন্নতির দিকে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, গিয়াস উদ্দিন ও আফরোজা কালাম।