
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ সরকারের কাছ থেকে জনগণ মুক্তি চায়। আজকে বাংলাদেশ একটি বিশাল ঋণের বোঝা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শ্রীলংকার অবস্থা আমরা অবলোকন করছি। বাংলাদেশ অতিদ্রুত শ্রীলংকার পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি শুক্রবার, (৮ এপ্রিল) বিকালে কোতোয়ালী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া, মিলাদ ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত বলেন, গত তিন মাসে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের ঋণ ছিল ৮ হাজার ৭ শত ৪৭ কোটি ইউ এস ডলার। আজকে সেটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৯ কোটি লাখ মার্কিন ডলারে। তিন মাসের ব্যবধানে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের বোঝা দাঁড়িয়েছে। যেটা জিডিপিতে ৪৬% এর অধিক। বিগত ২০১৪-১৫ সালে বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার কোটি। আজকে দিনে ১ লক্ষ কোটি টাকা। কেন এটা হচ্ছে কারণ বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এই পাচার হওয়ার কারণে বৈদেশিক মূল্যস্ফীতির কারণে আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। কুইক রেন্টাল পদ্ধতিতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে কারচুপি করা হয়েছে। মেগা দুর্নীতি করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজে ছিল মাত্র ৫৮ হাজার কোটি টাকা এখন তা ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা হয়ে গেছে। মাঝখানে ১ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রারম্ভিক বাজেট ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা এখন বর্তমানে ৫৬ হাজার কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর বাজেট ছিল ৮ হাজার কোটি টাকা কিন্তু বর্তমান তা দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা।অর্থাৎ বাংলাদেশ একটি লুটপাটের সমিতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
ডা.শাহাদাত হোসেন আরো বলেন, এই সরকার একটি লুটপাটের সরকার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন হয় তখন আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী-এমপিরা বলে আমাদের কিছু করার নেই, আমরা বলব আপনাদের করা আছে একটাই সেটা হচ্ছে এখনই পদত্যাগ করুন। জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার রক্ষায় আপনারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন তাই অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণকে মুক্তি দিন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সরকারের অবস্থায় কোন এখন যায় যায়। নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে চলছে সরকারের সবকিছুই।সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও আর্থিক খাতে লাগামহীন অনাচারের কারণে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় একটি দেশ চলতে পারে না। প্রয়োজন এ অবস্থার উত্তরণের। আর এ অবস্থার উত্তরণের একমাত্র পথ জালিম সরকারের কাছ থেকে আন্দোলনের মাধ্যমে জাতিকে মুক্ত করা।
কোতোয়ালি থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এন মোহাম্মদ রিমন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সোনা মানিক এর পরিচালনায় ইফতার মাহফিল ও পরিচিতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কোতোয়ালি থানা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা খান, যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদ, এম.আবু বক্কর রাজু, সহ-সাধারণ সম্পাদক দিদার হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম দিপু, ক্ষুদ্র জাতিস্বত্বা বিষয়ক সম্পাদক মারুফ হোসেন, সহ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইমরান সিদ্দিকী জ্যাকসন।