
চট্টগ্রামে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর সিলিং ফ্যানে ঝুলে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় আদালত আব্দুস সাত্তার নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই রায়ে আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আজ বুধবার (২৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেছেন।
দণ্ডিত আব্দুস সাত্তারের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার মুছাগরা গ্রামে।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দন্ডিত আব্দুস নিজ বাসায় তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। আমরা আদালতে খুনের বিষয়টি প্রমাণ করতে পেরেছি। আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজার ওয়ার্ডের টাংকির পাহাড় এলাকায় ছাদেকের কলোনিতে ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন। ওই বছরের ৪ আগস্ট রাতে আব্দুস সাত্তারের বাসা থেকে তার স্ত্রী শাহেদা আক্তারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই সময় আব্দুস সাত্তার পুলিশকে জানায়, তিনি মেয়ে নিয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন। ফিরে এসে দেখেন তার স্ত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু সাত্তারের আচরণে পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রতিবেশিরাও তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের তথ্য পুলিশকে দেয়। এ সময় সাত্তার স্বীকার করেন, ঘটনার দিন সকালে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। সন্ধ্যায় সাত্তার স্ত্রীকে গলা টিপে খুন করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। এরপর মেয়ে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। ফিরে এসে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে কান্না করতে থাকে।
স্থানীয়দের উপস্থিতিতে স্বীকারোক্তির পর পুলিশ সাত্তারকে গ্রেপ্তার করে। পরে খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুর রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর সাত্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মোট ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে আসামির সাফাই সাক্ষ্যসহ ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন।