
যশোরের মনিরামপুরে সদ্য ঘোষিত ছাত্রলীগের পাঁচ সদস্যের কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে উপজেলার ছাত্রলীগের ১৭টি ইউনিট। একই সঙ্গে নবগঠিত কমিটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের ইশারায় হয়েছে দাবি করে তাকেও নিজ উপজেলা মনিরামপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদ বঞ্চিতরা এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৯ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। একইসাথে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির সভাপতি করা হয় মাহমুদুল হাসান রকি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় রমেশ দেবনাথকে। ৫ সদস্যবিশিষ্ট ঐ কমিটিতে ১ জন সহ-সভাপতি ১ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ঘোষিত উপজেলা কমিটিতে অনভিজ্ঞ, বিতর্কিত, রাজনৈতিক ভারসাম্যহীন এবং সদ্য এসএসসি পাশ করাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ৭ মেআওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ৭ মে ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে ‘একটি শিশু কমিটি’ আখ্যা দিয়ে খেদাপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাদিউজ্জামান বলেন, ‘ঘোষিত কমিটির সভাপতি মণিরামপুর বাজারের একজন ফাস্টফুড ব্যবসায়ী এবং তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পর্যন্ত। এমনকি উপজেলায় ছাত্রসমাজের কাছে তিনি বিবাহিত ও ডিভোর্সি হিসাবে সমালোচিত। সাধারণ সম্পাদক রমেশ দেবনাথ যিনি মনোনীত হয়েছেন তার কোনো ছাত্রত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যুগ্ম সাধারণ পদে এস এম বাপ্পী হুসাইনের কোনো ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড শাখারও সাধারণ সদস্য পদ নেই। সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান অভি তিনি সদ্য এসএসসি পাস এবং ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। এরা সকলেই মণিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের অপরিচিত মুখ। আমরা দীর্ঘদিন উপজেলা রাজনীতি সংক্রিয় থেকেও আমরা পদ পদবী না পেয়ে হতাশ। অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত ও অযোগ্যদের পদ দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের মূল হোতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যকে অবাঞ্চিত করেন। একইসাথে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের সংক্রিয় সভাপতি-সম্পাদক এবং আহ্বায়করা গণপদত্যাগ করার সিন্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে, ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে প্রেসক্লাবের সামনে ১০ জন নেতাকর্মী বেধড়ক মারপিটের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন পদবঞ্চিত নেতারা। তবে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত আহতরা তাদের নাম প্রকাশ না করলেও তারা সবাই লেখক ভট্টাচার্য্যরে অনুসারী বলে দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পকেট কমিটির বিরুদ্ধে এবং পদবঞ্চিত নেতাদের উপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন তারা।
খুলনার ৪ জেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৪-১৭ মেখুলনার ৪ জেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৪-১৭ মে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতা হাদিউজ্জামান বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে প্রেসক্লাবের সামনে সন্ত্রাসীদের কাছে হামলার শিকার হয়েছি। এই ঘটনায় ১০ জন ছাত্রলীগনেতা আহত হয়েছে। আহতদের ভিতর মণিরামপুর সরকারি কলেজের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান ও ভোজগাতি ইউনিয়নের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ গুরুতর আহত হয়েছে।’ তারা শহরের একটি বাড়িতে সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান। তবে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত সংবাদ সম্মেলনে তাদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
এ বিষয়ে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব সাংবাদিকদের জানান, মণিরামপুরে একটি সুন্দর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আরও কয়েকজন ত্যাগী নেতার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রে নাম প্রস্তাবনা করা হয়েছে। পদবঞ্চিতদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তারা কেউ ছাত্রলীগনেতা না। তারপরও এমন হামলার ঘটনার সাথে যদি কোনো ছাত্রলীগনেতা জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।