
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, বিএনপির উস্কানিমূলক বক্তব্যের পরও আমাদের দলকে সংযত আচরণ করার জন্য আমরা নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু ঢাকা শহর কিংবা দেশের অন্য কোনো জায়গায় বিশৃঙ্খলা করলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে।
তিনি আজ শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ৫৭ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে চবি ক্যাম্পাসের জারুল তলায় আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা বিএনপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। শেখ হেলাল এমপি’র জনসভায় হামলা করে বেশ কয়েকজন মানুষকে হত্যা করেছিল তারা, আহসান উল্লাহ মাস্টার, ড. এস এম কিবরিয়া এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভাসহ আমাদের সভা-সমাবেশের ওপর বারবার বিএনপি বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। কিন্তু আমরা যখন ক্ষমতায় বিএনপির সমাবেশে একটি পটকাও ফুটে নাই। তারা যাতে সুন্দরভাবে সমাবেশ করতে পারে সেই ব্যবস্থাই সরকার সবসময় নিয়েছে।
চবি উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিএনপিকে কখনো দমন করার নীতি অবলম্বন করিনি। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদেরকে কোনো সমাবেশ করতে দেয়া হতো না। আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুইপাশে কাঁটাতারের বেড়া থাকতো। সেই বেড়ার বাইরে আমরা যেতে পারতাম না।
অনুষ্ঠানে ড. হাছান বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপ্তি এবং সুনাম নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুধু পাঠদান ও ডিগ্রি প্রদান নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে জ্ঞানের চর্চা করা এবং সেই জ্ঞানের চর্চার সাথে বিশ্বাঙ্গনের যোগসূত্র ঘটনো। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ বছরের পথ চলার পর আজকে ভাবতে হবে জ্ঞানচর্চার সাথে বিশ্বাঙ্গনের সংযোগ কতটুকু করতে পেরেছে এবং আর কতটুকু করা প্রয়োজন। বিশ্বময় যদি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিতে হয় তাহলে কয়েকটি কার্যক্রম গ্রহণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতির চর্চা আরো বাড়ানো প্রয়োজন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি এখানে আসার সময় একটি ছোট্ট মানববন্ধন দেখেছি, চারুকলা ডিপার্টমেন্টকে এখানে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমি মনে করি চারুকলা ডিপার্টমেন্টকে একেবারে এই ক্যাম্পাস থেকে সবকিছু গুটিয়ে শহরে পাঠিয়ে দেয়া একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল, এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমি উপাচার্যের সাথে আলাপ করেছি অন্তত মাস্টার্স ডিপার্টমেন্টটা আপাতত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে আসতে পারে এবং অনার্স ডিপার্টমেন্টটা শহরের ক্যাম্পাসে থাকতে পারে। এখানে অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে, সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রধান মন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব আবদুল করিম, সাধিারন সম্পাদক ও চিটাগাং চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহারুল হক শাহ ও নাজিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া।