
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভর করে আওয়ামী্লীগ আজ ক্ষমতায় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী্লীগ আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী বসবাস করছে। আপনারা সামনে আরো একাকী হয়ে যাবেন তখন আর জনগণের কাছে যেতে পারবেনা। তখন আপনাদের আশ্রয়স্থল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারী কিছু কর্মকর্তা ও দূর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা। তারা কি আপনাদের বাঁচাতে পারবে? রক্ষা করতে পারবে? যাদের উপর তারা ভর করে ক্ষমতায়, তাদের আমরা বার্তা দিচ্ছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সংবিধান্ মোতাবেক এ দেশের জনগণকে দৈনন্দিন সুরক্ষা দিবে। জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সন্ত্রাসীদের বাঁধাগ্রস্থ করবে। সাংবিধানিক অধিকার কেউ বাঁধাগ্রস্থ করতে চাই্লে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
তিনি আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারী) বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরীস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলে
ন, বাকশাল হচ্ছে আরেকটি ভোট চুরির মেশিন। ১৯৭৫ সালের এ দিনে বাকশালের মাধ্যমে নির্বাচনে যাতে তাদের যেতে না হয় সেজন্য সব দল বন্ধ করে তারা একদল করেছিল। অর্থাৎ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের কাছে যেতে তাদের কোন ইচ্ছা ছিল না। সাথে সাথে তারা আইনের শাসনকে নিজের হাতে নিয়ে ফেলেছিল। আইনের শাসনের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছিল।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তারা কেড়ে নিয়েছিল। আজকেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাই। সেদিনও গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরেছিল। সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। চারটি সরকারি পত্রিকা রাখা হয়েছিল। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণকে সেদিন তারা লুটপাটে নেমেছিল বাকশালের নাম দিয়ে। ব্যাংক ডাকাতি করেছিল। তখন ছিলো গণ ডাকাতি।আর এখন চলছে ডিজিটাল ডাকাতি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবী বাস্তবায়ন, গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন ও বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি কেন্দ্র ঘোষিত এই সমাবেশের আয়োজন করে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাকশাল হাজার হাজার মানুষকে, মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল রক্ষীবাহিনী দিয়ে। সেসব রক্ষীবাহিনীরা রাষ্টের সবসম্পদ লুটেপুটে খেয়েছে। সমস্ত ক্ষমতা রাষ্ট্র প্রধানের হাতে তুলে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, এখন পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার নোট ছাপানো হয়েছে। সব ব্যাংক খালি। রিজার্ভ খালি। টাকা নেই,রিজার্ভ নেই। আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। পাচার করে বিভিন্ন দেশে দেশে ঘরবাড়ি করেছে। রিজার্ভ খালি তাই দেশের মানুষের জন্য পণ্য আমদানি করতে পারছে না ডলার নেই বলে। যার জন্য দ্রব্যমূল্যর দাম আজ আকাশচুম্বী। যারা জনগনের অর্থ চুরি , ব্যাংক লুটপাট, মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের কোনো সমস্যা নেই,তাদের ত পকেট ভর্তি টাকা। পণ্যর বাজারমুল্য যতই বাড়ুক তাদের সমস্যা হবেনা। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। তারা বেহেশতে আছে। তাদের আগামির বেহেশতের দরকার নেই। আগামীর বেহেশতে যাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা। যারা নির্যাতিত হচ্ছে, কারাবরণ করছে, অত্যাচারে মারা গিয়েছে তারাই বেহেশতে যাবে।
আমীর খসরু বলেন, যে দলের নেতাকর্মীরা ভোট চুরি,ব্যাংক লুট,টেন্ডার, জায়গা দখলে ব্যস্ত তাদের সাথে জনগণের সম্পৃক্ত নেই। তারা ভিন্ন প্রক্রিয়ার নতুন রাজনীতি সৃষ্টি করেছে। এ রাজনীতি আওয়ামী মডেলের লুটপাটের, অর্থনীতি রাজনীতি। রাজনৈতিক ভাবে তারা আজ সম্পূর্ণভাবে পরাজিত। তাদের সমর্থন কারী কোনো মানুষ নেই আজ।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী বসবাস করছে। আপনারা আরও একা হয়ে যাবেন। তখন আর জনগণের কাছে যেতে পারবেন না। আপনাদের আশ্রয়স্থল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারী কিছু কর্মকর্তা ,দূর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা। তারা কি আপনাদের বাঁচাতে পারবে? তারা কি রক্ষা করতে পারবে?’
তিনি বলেন,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি অংশ সংবিধানকে সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে জনগণকে তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। তারা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে। আপনারা যদি জনগণের বিশ্বাস, আস্থা, সম্মান রক্ষা করতে না পারেন দেশে আইনের শাসন প্রবর্তন করতে পারবেন না। গায়েবী মামলা,মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার,ভয়-ভীতি দিয়ে সংবিধান রক্ষা করতে পারবেন না। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থা নিবেন না। আপনারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন না। আপনারা আজ ব্যর্থ। সবাইকে মামলা দেয়ার উদ্দেশ্য সাংবুধানিক দায়িত্ব পালন করছেন না।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের একটি কর্মসূচিকে নিয়ে ৪ টি মামলা হয়েছে। মাহবুবে রহমান শামীম, ড শাহাদাত,বক্কর, দিপ্তীসহ শত শত নেতাকর্মীদের মামলা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিএনপির সিদ্ধান্ত হচ্ছে সাংবিধানিক ,গণতান্ত্রিক ,শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ সরকারকে পতন ঘটাতে হবে। বিএনপি সে রাস্তায় চলছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বাঁধা উপেক্ষা করে আমাদের যে বিভাগীয় সভা সফল হয়েছে। হামলা, মামলাকে উপেক্ষা করে গণতান্ত্রিকভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফল করেছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশীদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।