
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার স্ফুরণ ঘটেছিল। বঙ্গবন্ধু এই জাতীয়তাবাদী চেতনায় বাঙলি জাতির স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন। যারা মনে করেছিল বাঙালির শৃঙ্খল মোচন হবে না, দাসত্বই নিয়তির পরিহাস। অথচ বাস্তব সত্য হলো এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকেই মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।
তিনি আজ সোমবার সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা যারা চায়নি এবং এখনো যারা বাংলাদেশকে স্বীকার করে না তারাই আবার জাতিকে দাসত্বের শৃঙ্খল পরিয়ে দিতে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। এমনকি বিদেশী প্রভুদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে অবৈধ পথে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করতে দেশ বিদেশে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ এরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা এদেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালিত করে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তধারার বিরুদ্ধে বেঈমানী করেছে। এই বেঈমানদের রাজনীতি করার অধিকার নেই এবং তারা যদি রাজনীতির মাঠ গরম করতে চায় তাহলে বুঝতে হবে এই অপশক্তিটি একাত্তরের পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মা।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে অবৈজ্ঞানিক ও সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান বাঙালির আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সরাসরি ব্যর্থ হয়েছে। তৎকালীন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। মাত্র শতকরা ৭ভাগ মানুষের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার অর্থই ছিল বাঙালিকে শৃঙ্খলিত করা। তাই বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য নয় বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন বাঙালি জাতি ও জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা একমাত্র কাক্সিক্ষত লক্ষ্য হতে পারে। সেই লক্ষ্য অর্জনে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আমলের ২৪ বছরের রাজনীতিতে প্রায় ১৩ বছর কারাগারে ছিলেন। আন্দোলনের নানান রক্তঝরা বাকঁ অতিক্রম করে একাত্তর সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ১৯ মিনিটের ভাষণে বাঙালির বঞ্চনা, বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা চাই। এই একটি মাত্র ঘোষণায় বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের রূপরেখা নির্দেশিত হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের অর্থনীতিক মুক্তি চেয়েছিলেন এবং সেই পথেই এগিয়ে গিয়ে সোনার বাংলা বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাকে সপরিবারে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে বাঙালির হাতে আবারো শৃঙ্খল পরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু সেদিন যারা দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল তাদের সেই স্বপ্নকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছেন। জাতি আজ তার নেতৃত্বেই ঘুরে দাড়িয়েছে। তিনি বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যে বলেন, এখনো যারা পাকিস্তানের জন্য মায়া কান্না করেন ঐ দেশটি দেউলিয়া হতে চলেছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটাই বাকি আছে। পাকিস্তানে বর্তমানে মাত্র ১৩ দিনের রিজার্ভ আছে। আমরা জানি, তিন মাসের যদি রিজার্ভ থাকে ঐ দেশটি ঝুঁকিপূর্ণ নয়। বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ৩২ বিলিয়ন ডলার। এই রিজার্ভ অনায়াসে ৫ মাসের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের পরিমাপ। এটা মনে রাখা উচিৎ বাংলাদেশ কখনো শ্রীলংকা ও সোমালিয়া হবে না। কারণ বাংলাদেশ উন্নয়নের সকল সূচকে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে আছে।
চট্টগ্রাম মহানগর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দীন চৌধুরী, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোঃ হোসেন, এড. কামাল উদ্দীন আহমেদ, মোঃ জাবেদ, কাজী আলতাফ হোসেন, শামসুল আলম ও জানে আলম।
উপস্থিত ছিলেন, সহ সভাপতি এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, মশিউর রহমান চৌধুরী, আবু তাহের, আব্দুল আহাদ, জোবাইরা নার্গিস খান, ড. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য বখতেয়ার উদ্দীন খান, আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ, জাফর আলম চৌধুরী, সাইফুদ্দীন খালেদ বাহার, আব্দুল লতিফ টিপু, ড. নেছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু, হাজী বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের হাজী সিদ্দিক আলম, সাহাব উদ্দীন আহমেদ, মমিনুল হক, সাহাব উদ্দীন আহমেদ, এ এস এম ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের স্বপন কুমার মজুমদার, সৈয়দ মোহাম্মদ জাকারিয়া, মোঃ নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, জামাল উদ্দীন, আব্দুল আজিজ মোল্লা, ইস্কান্দর মিয়া, আতিকুর রহমান, আবছার উদ্দীন চৌধুরী, ইকবাল হাসান, আবুল কাসেম, হাজী আব্দুল মোতালেব, সিরাজুল ইসলাম, হাজী মোহাম্মদ হাসান, সালাউদ্দীন ইবনে আহমেদ, মোহাম্মদ মুসা, আব্দুল মালেক, আবু তৈয়ব সিদ্দিকী, শেখ সরওয়ার্দী, ইকবাল চৌধুরী, হাবিবুর রহমান, জসীম উদ্দীন, ইফতেখার আলম জাহেদ, খালেদ হায়াত খান মাসুক, লুৎফুল হক খুশী প্রমুখ।