ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রামে বন্যায় ১৩৫ কোটির টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি, মৃত ১৬, অনেকেই নিখোঁজ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে চট্টগ্রামে অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। এসময় ঘর-বাড়ী, ফসলি ক্ষেত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সব মিলিয়ে ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ।

সৃষ্ট বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ জেলার চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলা। গত সোমবার রাত থেকে ৩ দিন কার্যত পানির নিচে ছিল এসব এলাকা। টানা ৩ দিন বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হলেও এখনো অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়নি বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন সিনিয়র কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক হিসেবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার। গত ৩দিন আমরা খাবার বরাদ্দ দিয়েছি। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে মোট ১ হাজার ১৯৩টি।

এদিকে বুধবার থেকে পানি কমতে শুরু করায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকা ডুবে ও স্রোতের টানে ডুবে নিখোঁজ হয় অনেক নারী পুরুষ শিশু লাশ ভেসে উঠে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় ৩ উপজেলা ও মহানগরীতে মোট ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসন মৃত্যুর এই সংখ্যা নিশ্চিত করে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চন্দনাইশ, সাতকানিয়ায় ও লোহাগাড়ায় অন্তত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সাফুল্লাহ মজুমদার জানান, এখন পর্যন্ত বন্যায় চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন তিনজন। নিহতদের মধ্যে সাতকানিয়ায় ৭, লোহাগাড়ায় ৪, চন্দনাইশে ২, বাঁশখালীতে ১ ও রাউজানে একজন করে এবং চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১ জন রয়েছেন।

এদিকে চন্দনাইশেও একজন নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়েছেন থানার ওসি আনোয়ার হোসেন।

.

তবে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘সাতকানিয়া উপজেলায় ৬ জন নিহত ও ৩ জন নিখোঁজ ছিল। বুধবার বিকেলে নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এখন নিহত মোট ৭ জন ও নিখোঁজ ২ জন।’

সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকালে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ও পদুয়া এলাকা থেকে দুই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন কলেজছাত্র সাকিব ও অটোরিকশা চালক আব্দুল মাবুদ। এদিন সাতকানিয়ায় পাওয়া যায় আরও ৪ মরদেহ। তারা হলেন- সাতকানিয়া পৈরসভার সাকিব, ইদ্রীস, বদিউল আলম ও আব্দুর রহীম।

এর আগে সোমবার চট্টগ্রামে মহানগরী চসিক ১ নং ওয়ার্ড ইসলামিয়াহাট বাদামতল এলাকায় জলাবদ্ধ সড়কে ডুবে মারা যান কলেজছাত্রী নিপা পালিত। পরদিন লোহাগাড়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পানিতে তালিয়ে গিয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু হয়। মৃত জুনায়েদ ইসলাম জারিফ (২২) বেসরকারি বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এরপর বুধবার একই উপজেলায় ভেসে উঠে কৃষক আসহাবের মরদেহ।

.

একই দিন সাতকানিয়ায় শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস, হেলাল, সোভা কারণ এবং চন্দনাইশে আবু সৈয়দ ও আনাস নামে দাদা-নাতির মরদেহ ভেসে ওঠে। এদিন ভোরে রাউজােনর হালদা নদী থেকে শাহেদ হোসেন বাবু নামের এক তরুণ উদ্যোক্তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার বিকেলে রাউজানে মৎস্য খামার থেকে ফেরার পথে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও গত শনিবার বাঁশখালীতে অতিবৃষ্টির কারণে দেয়াল ধসে মিজবাহ নামে এক শিশু মারা যায়।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে তিন দিন ধরে বিদ্যুৎহীন পুরো সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকা। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ নানামুখী সমস্যায় পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। তবে বুধবার রাত থেকে এসব এলাকার পানি নেমে যাওয়া সাপেক্ষে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করেছে।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাতকানিয়া ছাড়া দক্ষিণের সব উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। সাতকানিয়ায়ও কাজ চলছে, দ্রুতই সংযোগ দেয়া যাবে বলে আশা করছি।’

জেলা প্রশাসন ষুত্রে জানা গেছে, সৃষ্ট জেলায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৭৫৩ জনকে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি আগস্ট মাসের গত সাত দিনে ৬৬৪ মিলিমিটার (মিমি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে গত ৪ আগস্ট ৪২ দশমিক ৮ মিমি, ৫ আগস্ট ৬৪ দশমিক ২ মিমি, ৬ আগস্ট ২৩১ দশমিক ৫ মিমি এবং ৭ আগস্ট ২১৬ দশমিক ৪ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে দক্ষিণের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া ও আনোয়ারা এবং উত্তরের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকার পরিমাণ বেশি।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print