চট্টগ্রামে ব্যাংক ঋণ খেলাপি মামলায় মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রির মালিক মুজিবুর রহমান মিলনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। একই রায়ে আদালত দণ্ডিত আসামিকে ১০০ কোটি ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।
আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আবদুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন দণ্ডিত আসামি মিলন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রির মালিক মুজিবুর রহমান মিলন স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির কথা বলে অগ্রণী ব্যাংক লালদিঘী পূর্বপাড় করপোরেট শাখা থেকে ২০১০ সালে তিন দফায় মোট ৮২ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ৪৪ টাকা ঋণ নেন। কিছু অর্থ পরিশোধ করার পর ২০১৭ সালের ৩০ মে ব্যাংকের ডিজিএম স্বাক্ষরিত হিসাবমতে আসামির কাছ থেকে ৯১ কোটি ৯২ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯২ টাকা পাওনা ছিল।
ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ না করে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসামি গা ঢাকা দেয়। ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের বিষয় অনুসন্ধান শেষে দুদক, সাজেক চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক জাফর আহমেদ বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২৪ মে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর দুদক কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট আদালত এ মামলায় চার্জ গঠন করেন। আদালত ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার এ রায় প্রদান করেন। আসামি মুজিবুর রহমান মিলন পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত হননি।
দুদকের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বাংলা বলেন, ‘ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ না করে আত্মসাতের অভিযোগে আসামি মুজিবুর রহমান মিলনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আসামিকে ১০০ কোটি ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে, দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে আসামি মিলনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। দণ্ডবিধি ৪২০ ধারার অপরাধে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। উভয় সাজা একত্রে চলবে।’