
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর রক্ষার দাবীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন।
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারী) চট্টগ্রাম বন্দর ভবন চত্বরে অনুষ্ঠিত অবস্থান ধর্মঘটে ৩ দফা দাবী তুলে ধরা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে তিন দফা দাবী বাস্তবায়নের ঘোষনা না দিলে কর্ণফুলীর তীরে প্রতিবাদী মঞ্চ করে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনসহ পাঁচ সংগঠন।
তিন দফা দাবী হচ্ছে, কর্ণফুলীর মাঝখানে জেটি নির্মান বন্ধ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৪ সালে তৈরি স্ট্রেটেজিক মাস্টার প্ল্যান অফ চট্টগ্রাম পোর্ট অনুযায়ী কর্ণফুলীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এবং হাইকোর্ট নির্দেশিত অবৈধ মাছ বাজার ভেড়া মার্কেটসহ ২০৮১ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান ধর্মঘটে, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম ও এস কে ফাইন্ডেশনের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গঅংশ গ্রহন করে।
অবস্থান ধর্মঘটে বক্তারা বলেন, কর্ণফুলী নাব্যতা স্বাভাবিক রেখে বন্দর রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে ২০১৪ সালে এশিয়ান
ডেভেলফমেন্ট ব্যাংক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মাস্টার প্ল্যান প্রনয়ন করে। উক্ত প্ল্যানে নদীর প্রবাহমান ধারা ও বন্দরের সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করা আছে। সেই ম্যাপে ফিরিঙ্গি বাজার থেকে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ককে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। বন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা স্ট্রেটেজিক মাস্টার প্ল্যান ২০১৪ হওয়ার পরে কৌশলে পার্ক মাছ বাজার ও ভেড়া মার্কেট স্থাপন করে তিনশত মিটার কর্ণফুলী নদী দখল করে নেয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালে ৪-৯ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত পাঁচদিন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে রহস্যজনক কারণে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। হাইকোর্ট নির্দেশিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখে কর্ণফুলী নদীর তিনশত পঞ্চাশ মিটার গভীরে নদীর মাঝখানে প্রবাহধারা বন্ধ করে ২৮ দশমিক ৩৫ মিটার নদী দখল করে একটি জেটি নির্মানের জন্য ৮৮.৪৪ লক্ষ টাকায় রেইনবো এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিয়োগ করে। চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের আবেদন ও অ্যাডভোকেট মনজিল মোশের্দের হস্তক্ষেপে উক্ত স্থাপনা নির্মান বন্ধ করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। নিজেদের কৃত মাস্টার প্ল্যান বাদ দিয়ে নতুন করে কর্ণফুলীকে হত্যার বিষয়টি জানার পর থেকে আন্দোলনে নামে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার মাহফুজুর রহমান, সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, বেলার মনিরা পারভিন রুবা,গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, এস কে ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী রেজাউল করি সিকদার বাপ্পী, গ্রিন ফিংগার্স এর কো ফাউন্ডার আবু সুফিয়ান, বেলা চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কর্মকর্তা ফারমিন এলাহি ইরা কারকেরশ্বর, দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক, সাংবাদিক তুষার মুজিব প্রমুখ।