আট মাস ধরে গাজা উপত্যকায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের অনবরত বিমান হামলায় ইতিমধ্যে পুরো গাজা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া টানা ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট বিরাজ করছে। সম্প্রতি মিসরের সঙ্গে গাজার রাফার স্থল সীমান্তপথ ইসরায়েল নিজেদের দখলে নিলে এই সংকট আরও তীব্র হয়। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে গাজায় খাদ্যপণ্য বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থার কর্মীদের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাফায় হামলার কয়েক দিন পর গাজার ব্যবসায়ীদের ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খাদ্যপণ্য যেমন তাজা ফল, শাকসবজি ও দুগ্ধজাত দ্রব্য কেনা পুনরায় শুরু করার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সপ্তাহ তিনেক আগে গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফায় হামলা জোরদার করে নেতানিয়াহু বাহিনী। তাদের হামলায় মিসর হয়ে গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশের প্রধান প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে আরও বেশি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে তেল আবিব।
গাজা চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান আয়েদ আবু রমজান বলেন, যুদ্ধ শুরুর আগে পশ্চিম তীর ও ইসরায়েল থেকে পণ্য ক্রয় করতেন, এমন ব্যবসায়ীদের ফোন দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। ফোন দিয়ে পণ্য কেনায় তারা সমন্বয় করবে বলে জানায়।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা বলছেন, গত বছরের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হলে বাইরে থেকে গাজায় পণ্য প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসরায়েল। এর ফলে তখন থেকে আর কোনো পণ্য ঢুকেনি। তবে এবার প্রথমবারের মতো অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, ইসরায়েল বা পশ্চিম তীরে উৎপাদিত পণ্য গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর শাখা কোগটের সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করলে সংস্থাটি জানায়, তারা গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তার প্রবেশ এবং খাদ্যপণ্য বিক্রির পরিমাণ বাড়ানোর উপায়গুলো দেখছে।
এই সংস্থাটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ত্রাণসহায়তা প্রবেশের বিষয়টি দেখভাল করে থাকে। কোগটের মুখপাত্র শিমন ফ্রিডম্যান বলেন, গাজায় খাবারের সরবরাহ বাড়াতে বেসরকারি খাতকে কিছু খাদ্যপণ্য আনার অনুমতি দেয়া হয়েছে।