
মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহাযার্থে মালয়েশিয়া সরকারের পাঠানো ত্রাণ ভর্তি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌছেছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় “নটিক্যাল আলিয়া” নামে মালয়েশিয়া সংসদের এমপি আব্দুল আজিজন বীন আব্দুর রহিম এর নেতৃত্বে বাংলাদেশে আসা জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) নোঙ্গর করার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর করেন। মালয়েশিয়া দূতাবাসের কর্মকতারা
জাহাজটির পণ্য খালাস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম ইউনিট) রিয়ার এডমিরাল খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, মালয়েশিয়া রাষ্ট্রদূত নুর আশেকিন বিনতে মো. তাঈপ ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।

পরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বন্দর কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪‘শ ৭২ মেট্রিক টন বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করেন। এর পর পরই এসব খাদ্যপণ্য বাহি কন্টেইনার খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক। তিনি জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহাযার্থে পাঠানে মালয়েশিয়ান জাহাজটিতে ওষুধ, খাদ্য সামগ্রী ও পোশাক রয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক, সাংবাদিক ও নাবিকসহ প্রায় দেড়শ জন লোক রয়েছে জাহাজটিতে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম বলেন, “সকাল ১১টায় সিসিটি টার্মিনালে জাহাজটি ভিড়েছে। এর পর জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে একটি দল জাহাজটি ভিজিট করেন। পরে দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে পণ্যগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, জাহাজে ১৬টিইইউস (প্রতিটি ২০ফুট দৈঘের কন্টেইনার ১ টিইইউস) কন্টেইনার এবং এক হাজার চারশ মেট্রিক টন কার্গো পণ্য রয়েছে।

জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন বলেন, পণ্যভর্তি কন্টেইনার খালাসের পর ১৫০টি ট্রাকে ভর্তি করে এসব সামগ্রী কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে নেয়ার পর ১৫ হাজার প্যাকেট প্রস্তুত করার পর টেকনাফ, কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গা মুসলমানদের কাছে এসব সাহায্য সামগ্রী পৌছে দেয়া হবে। তবে এ প্রক্রিয়া অন্তত সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
জানাগেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য খাবার ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে জাহাজটি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মালয়েশিয়া থেকে রওনা হয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি ইয়াঙ্গুনে পৌঁছালে সেখানে মিয়ানমারে বুডিষ্ট নাগরিকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল। তবে পরে জাহাজে থাকা ৫০০ টন খাবার ও ওষুধসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী ইয়াঙ্গুনে সরবরাহের পর সেটি বাকি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়। মালয়েশিয়ার মুসলিম সংগঠনগুলোর পাশাপাশি দেশীয় এবং বিদেশি সংগঠনগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণবাহী এ জাহাজ পাঠিয়েছে। মিয়ানমার সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের পর থেকে গত চার মসে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।