ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট

ভাষা নিয়ে নেই গবেষণা, নেই বরাদ্দ

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মূল কাজ বিশ্বের সব ভাষার সংরক্ষণ ও ভাষা নিয়ে গবেষণা করা। দেশের বিপন্ন ভাষাগুলো রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পার হলেও প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। দেশে বেশ কিছু বিপন্ন ভাষা চিহ্নিত করা হলেও সেগুলো রক্ষার উদ্যোগ নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

আর প্রতিষ্ঠানটিতে একটি ভাষা জাদুঘর স্থাপন করা হলেও তা সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে না। কারণ জাদুঘরটি এখনো ব্যবহার উপযোগী হয়নি।
ইউনেসকো ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করলে বাংলাদেশ সরকার একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা চর্চা ও গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২০০০ সালের মাঝামাঝি প্রায় ১৯৪ কোটি ৯ লাখ টাকায় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প’ অনুমোদিত হয়।

২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ছয়তলা একটি ভবন রয়েছে।
ইনস্টিটিউটের একাধিক বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, বিভিন্ন দিবস পালন ও সরকারের গতানুগতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতেই প্রতিষ্ঠানটি বছরের বেশির ভাগ সময় পার করেছে।

এর বাইরে ভাষাসংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা, সেমিনার ও সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে, যা খুবই নগণ্য। তবে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে একটি বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে বার্ষিক প্রতিবেদনে গবেষণার জন্য কোনো বরাদ্দ চোখে পড়েনি।
ইনস্টিটিউটের জনবল কাঠামো অনুযায়ী ১৭টি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার পদসহ মোট ৯৮টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। তবে বর্তমানে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত আছেন ৬৪ জন।

১৪ বছরে প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো গবেষক নিয়োগ পাননি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট তাদের মূল কাজ না করলেও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাঁদের বিকল্প অফিস হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার করতেন। সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তাঁদের নির্ধারিত অফিস থাকলেও সেখানে তাঁরা বসতেন না বললেই চলে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান, সে কারণে তাঁরা এখানে বসে নানা তদবির শুনতেন। শিক্ষা ক্যাডারে বদলিসহ অন্য সিদ্ধান্তগুলোও নেওয়া হতো এখান থেকেই। এমনকি ইনস্টিটিউটের অফিসে বসে মন্ত্রীদের স্টাফরা তাঁদের পক্ষে নানা ধরনের আর্থিক ডিল করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই অফিসে তাঁরা রাজনৈতিক সাক্ষাৎও দিতেন।

সূত্র জানায়, আগে প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক বাজেট ছিল প্রায় ছয় কোটি টাকা। সেই বরাদ্দ বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে আট কোটি টাকার বেশি হয়েছে। যদি প্রতিবছরের বাজেট ছয় কোটি টাকাও ধরা হয়, তবে ১৪ বছরে প্রতিষ্ঠানটির পেছনে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯৪ কোটি টাকা। এই টাকা মূলত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার পেছনে ব্যয় হয়েছে। আর নির্মাণ ব্যয় ১৯৪ কোটি টাকা যোগ করলে প্রতিষ্ঠানটির পেছনে গত ১৪ বছরে সরকারের খরচ হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকা। অথচ এই সময় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে মাত্র একটি গবেষণাকাজ শেষ করা হয়েছে। ওই গবেষণায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ১৪টি ভাষা বিপন্ন বলে চিহ্নিত করা হলেও ভাষাগুলো রক্ষায় নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন ২০১০-এ প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বের বিষয়ে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও ক্ষুদ্র জাতিগুলোর ভাষা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, এসংক্রান্ত গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা; বাংলাসহ অন্যান্য ভাষা আন্দোলন বিষয়ে গবেষণা; বাংলা ভাষার উন্নয়নে গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা; বাংলাসহ পৃথিবীর সব ভাষার বিবর্তনবিষয়ক গবেষণা; ভাষা বিষয়ে গবেষণার জন্য দেশি-বিদেশিদের ফেলোশিপ প্রদান; ভাষা ও ভাষাবিষয়ক গবেষণায় অবদানের জন্য দেশি-বিদেশিদের পদক ও সম্মাননা প্রদান; ভাষা বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বৃত্তি প্রদান; গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা ইত্যাদি।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের নিচতলায় বড় পরিসরে তৈরি করা হয়েছে ‘ভাষা জাদুঘর’। ২০২৩ সালে এটি উদ্বোধন করা হলেও এ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। এই জাদুঘরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষার নমুনা, জনগোষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের কিছু তথ্য-উপাত্ত ও ছবি রয়েছে। আর সাততলায় করা হয়েছে ভাষার লিখন রীতির আর্কাইভ। তবে এগুলো এখনো জনসাধারণের ব্যবহার উপযোগী হয়নি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক (ভাষা, গবেষণা ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা নতুন বেশ কিছু পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত রয়েছি। এরপর ভাষা সংরক্ষণের নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করব। এ ছাড়া ভাষা জাদুঘরে বিভিন্ন ভাষার বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো হবে। কিভাবে এই জাদুঘর আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা যায় সে লক্ষ্যেও কাজ করব।’

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print