ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

শিক্ষকদের পৃথক আন্দোলন

শিক্ষকদের ওপর জলকামান লাঠিপেটা

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে গতকাল বুধবার বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পৃথক আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীদের এক পক্ষ পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। অপর পক্ষ কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় শুয়ে সড়ক অবরোধ করে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রথমে জলকামান ব্যবহার ও পরে লাঠিপেটা করে।

লাঠিপেটায় অন্তত ২১ জন গুরুতর আহত হওয়ার দাবি করেছে শিক্ষকদের পৃথক সংগঠন। এ ছাড়া দুই পক্ষের ১৩ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে একটা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে শিক্ষকরা জানান। পুলিশ লাঠিপেটা করার কথা অস্বীকার করেছে।

পুলিশের হামলার প্রতিবাদে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদসভা করে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

গতকাল দুপুরে ‘বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’ এবং ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ’ ব্যানারে পৃথক পদযাত্রা শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে এদিন দুপুরে প্রেস ক্লাবে জড়ো হন তৃতীয় ধাপে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রতিনিধিরা। দুপুর ১টা ১০ মিনিটে পৃথক আবেদন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার দিকে রওনা হন তাঁরা।

হাইকোর্টের সামনে পুলিশ তাঁদের আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে। আন্দোলনকারীরা বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রা অব্যাহত রাখেন। এ সময় কদম ফোয়ারার সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। শিক্ষকদের সবাইকে না গিয়ে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়। শিক্ষকরা রাজি না হলে দুপুর দেড়টায় পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে।

এতেও আন্দোলনকারীদের সরানো সম্ভব না হলে লাঠিপেটা শুরু করে তারা। এতে অন্তত পাঁচ-ছয়জন আহত হন। বিক্ষোভকারীরা পিছু হটে গিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রেস ক্লাবে অবস্থান নেন। সেখানেও পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে। এতে তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পুলিশ অন্তত ছয়জন আন্দোলনকারীকে আটক করে।

সংগঠনটির সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন কালের কণ্ঠকে বলেন, চার হাজার ১৫৯টি বঞ্চিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রতিনিধিরা নিজ নিজ আবেদন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দিতে যাই। এ সময় পুলিশ জলকামানের পাশাপাশি বারবার লাঠিচার্জ করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় সবাই ফিরে যান। তবে পুলিশ আন্দোলনরত অন্তত ছয়জন শিক্ষককে আটক করে। পরে অবশ্য সংগঠনের সভাপতির জিম্মায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

তিনি জানান, পুলিশের এই হেনস্তার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সাল থেকে আমরা বৈষম্যের শিকার। প্রতিহিংসা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এসব বিদ্যালয় বারবার জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে এই দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা এর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।

একই দিনে দুপুর ১২টায় যমুনায় পদযাত্রা শুরু করে বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা। বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত সুনিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

শিক্ষকরা হাইকোর্ট পর্যন্ত গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা এগোতে থাকলে কদম ফোয়ারার সামনে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পরে শিক্ষকরা কাফনের কাপড় জড়িয়ে রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ করেন। সড়কে অবস্থানের কারণে পল্টন থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে হাইকোর্টের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। আবার মৎস্য ভবন থেকে শিক্ষা ভবনে আসার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় পুলিশ পল্টন থেকে কদম ফোয়ারার দিকে আসা গাড়িগুলো প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে ইউটার্ন দিয়ে পল্টনে পাঠায়। মৎস্য ভবন থেকে আসা গাড়িগুলোকে বিকল্প রাস্তা হিসেবে শিক্ষা ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথ করে দেয়। এতে ওই সড়কে তীব্র যানজটে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। দুপুর ১টায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

প্রতিবন্ধী শিক্ষক আন্দোলনের সমন্বয়ক ইলিয়াস রাজ কালের কণ্ঠকে বলেন, পুলিশের বাধার মুখে আমরা সড়ক থেকে ফিরে আসি। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় আমাদের অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া সাতজন শিক্ষককে আটক করা হয়। যদিও পরে তাঁরা সবাই মুচলেকা দিয়ে ফিরে এসেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

থানায় মুচলেকা দিয়ে ফিরে আসা গাইবান্ধার একটি বিশেষায়িত স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহানারা আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়েছে। পা থেকে পিঠ পর্যন্ত লাঠিপেটা করেছে। লাথি-ঘুষি মেরেছে। এতে অনেকেই গুরুতর আহত। কারো কারো জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে, আবার কারো মোবাইল ও হ্যান্ড মাইক ছিনিয়ে নিয়েছে। পরে দুপুর দেড়টায় আমাদের কয়েকজনকে থানায় নিয়ে যায়। মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে আসতে হয়েছে। থানা থেকে ফিরেও সেই কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, আমাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষার্থীদের মিডডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর কালের কণ্ঠকে বলেন, কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় শুয়ে থাকা শিক্ষকদের আমরা সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তবে তাঁদের লাঠিপেটা করা হয়নি। প্রথমে আমরা তাঁদের একটি প্রতিনিধিদল পাঠাতে বলি। তাঁরা রাজি না হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যরা গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা করলে কদম ফোয়ারা মোড়ে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েকজন শিক্ষক রাস্তায় শুয়ে পড়েন।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print