ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সিলেটের জঙ্গি আস্তানা থেকে ৫৫ জনকে উদ্ধার করেছে সেনা বাহিনী

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোর অপারেশন চলছে। প্রায় ৩০ ঘণ্টা ঘিরে রাখার পর শনিবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’।

বাড়িতে আটকে পড়া ২৯ পরিবারের নারী শিশুসহ ৫৫ জিম্মি বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এখন ওই ভবনের নিচ তলায় জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে অভিযান শুরু হয়েছে।

এর আগে সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে লে. কর্নেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে আতিয়া মহলে এ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে অংশ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো সদস্যরা। যান চলাচল বন্ধ থাকায় সকাল থেকে সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা এ খবর নিশ্চিত করেন।

জঙ্গিরা পুলিশের আহ্বানের পরও আত্মসমর্পণে সাড়া না দেওয়ায় সোয়াট টিমের সঙ্গে অভিযানে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ইউনিট। শুক্রবার সারা রাত সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ইউনিট ও সোয়াট সদস্যরা বাসাটি ও তার আশাপাশের এলাকা ঘিরে রেখে অভিযান চালাতে প্রস্তুতি নেয়। ওই এলাকায় ও তার আশপাশে বাড়ানো হয় পুলিশের সংখ্যা। বাসার চারদিক হ্যাজাক লাইট দিয়ে আলোকিত করে রাখা হয়। বাসাটির ৫তলা ও ৪তলা দুটি ভবনের সবকটি ফ্লাটে ২৮টি পরিবারের লোকজন জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। ভেতরে থাকা লোকজনকে কিভাবে বের করে আনা যায়, সে চেষ্টায় রয়েছে যৌথ বাহিনী। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে বের করে আনতে দেখা যায়নি।

অভিযানের আগে সকাল পৌনে ৯টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের সাঁজোয়া যান, কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।

সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে অপরেশন ‘স্প্রিং রেইন’ নামে অভিযান শুরুর কথা বলা হয়েছিল। তবে সেনাবাহিনী এ নাম পরিবর্তন করে অপারেশন ‘টোয়াইলাইট’ রেখেছে।

সেনাবাহিনীর আর্মি ইনটেলিজেন্সের দায়িত্বশীল একজন সাংবাদিকদের জানান, ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে এই অভিযান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে হচ্ছে। পুলিশ ও সোয়াট সহায়তা করছে। সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা মূল অভিযান চালাচ্ছেন। ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়াই বাইরে আছেন পুলিশ, র‌্যাব, পিবিআই, ডিবি, এসবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শত শত সদস্য।

অভিযান চালানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতির আগে এলাকার জনসাধারণ ও সংবাদকর্মীকে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সরে যেতে বলা হয়েছে। এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।

এর আগে, শুক্রবার ভোর থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ‘আতিয়া মহল’ ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উস্তার আলীর নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন পাঁচতলা ওই ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে নারীসহ একাধিক ‘জঙ্গি’ রয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। ওই ফ্ল্যাটের জানালা দিয়ে নারী ও পুরুষ ‘জঙ্গি’ শুক্রবার দুপুরের পর দ্রুত সোয়াত ফোর্স ‘পাঠাতে বলেছিল’। তারা বলেছিল, ‘তোমরা (পুলিশ) শয়তানের পথে, আমরা আল্লাহর পথে। দেরি কেন, দ্রুত সোয়াত ফোর্স পাঠাও।’

শুক্রবার বিকেল ৪টার কিছু আগে ঢাকা থেকে অতিরিক্ত উপকমিশনার আশিকুর রহমানের নেতৃত্ব ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় সোয়াত ফোর্স। এর কিছুক্ষণ পর বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটও আসে ঘটনাস্থলে। সন্ধ্যার দিকে দুটি অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়। রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে মেজর রোকন ও মেজর রাব্বির নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ইউনিটের একটি দল। রাতে সার্চ লাইট দিয়ে আলোকিত করে রাখা হয় পুরো আতিয়া মহল। বাড়ানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা। এ ছাড়া সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকদের রাখা হয় প্রস্তুত। তবে ‘জঙ্গিদের’ ফ্ল্যাটে চূড়ান্ত অভিযান আর হয়নি।

এ ছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক যুবককে আটক করা হয় বলে জানিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া।

এদিকে, ওই ভবনে আটকা পড়া ২৯টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ আর আতঙ্কে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাইরে থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না।

আতিয়া মহলের মালিক উস্তার আলী জানিয়েছিলেন, প্রায় তিন মাস আগে একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা পরিচয়ে নিচতলার ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেন কাওছার ও মর্জিনা নামে দম্পতি।

সন্দেহজনক ওই জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের প্রস্তুতিতে সোয়াটের পাশাপাশি সেনাবাহিনী যোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ কমিশনার মো. গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের (জঙ্গি) আত্মসমর্পণ করাতে। এ জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিত আমাদের অনুকূলে রয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর ‘আতিয়া মহল’ ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ওই এলাকার বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া আতিয়া মহলের বিপরীত দিকে ‘আতিয়া মহল-২’ নামের ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া অন্তত ৭০ জন বাসিন্দাকে সন্ধ্যার দিকে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়েছে। এর আগে তাঁদের স্থানীয় জহির-তাহির মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ে রাখা হয়েছিল।

এর আগে সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, বেলা একটা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত হ্যান্ডমাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্য ১টা ৪৮ মিনিট থেকে ২টা ১৬ মিনিট পর্যন্ত জঙ্গিরা সাড়া দিয়েছিল। এরপর থেকে আর কোনো উত্তর নেই।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানায়, বেলা আড়াইটা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ১০ বারের বেশি পুলিশের ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা গেছে। ঘিরে রাখা বাড়িটির দুইতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত ২৯টি ইউনিটে ২৯টি পরিবার রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ

***সিলেটে পুলিশ চেকপোস্টে বোমা হামলা, ২ পুলিশসহ নিহত ৪

***সিলেটে ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ স্থগিত, ফের বিস্ফোরণ

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print