ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

পরকিয়ার কারণেই খুন হয় চবি ছাত্র আলাউল: প্রেমিকা রুম্পাসহ গ্রেফতার ৪

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

আলাউলের প্রেমিকা রুম্পা ও তার স্বামী ইকবাল।

চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার শহীদ নগর এলাকায় খুন হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের (চবি) বাংলা বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ আলাউদ্দিন চৌধুরী আলাউল হত্যার জট খুলতে শুরু করেছে। হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পর পুলিশ দাবী করছে তারা আলাউল হত্যার রহস্য উম্মোচন করতে পেরেছে।

মূলত পরকিয়া প্রেমের কারণেই আলাউলকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। আর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রামের রাউজান ভোলার লালমোহনসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরকিয়া প্রেমের নায়িকাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর আজ সকাল ১০টায় বায়োজিদ থানায় সাংবাদিকদের সামনে রুম্পা ও তার স্বামীসহ ৪ জনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, ইয়াসমিন আক্তার রুম্পা (২১) তার স্বামী মো. ইকবাল হোসেন (২৭) ও রুম্পার দুই সৎ দেবর মো. তৈয়ব ও মো. হেলাল।

পুলিশ জানায় সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে ইকবালকে রাউজানের হিঙ্গলায় তার খালার বাড়ি থেকে স্ত্রী রুম্পাসহ গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোলা জেলার লালমোহন থেকে তৈয়ব ও হেলালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আজ বুধবার ভোরে ভোলা থেকে বায়েজিদে আনা হয়েছে।

নিহত আলাউল।

গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন চৌধুরী আলাউল হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছে। স্ত্রীর পরকিয়ার প্রেমিক আলাউলকে বাধা দিয়ে এ পথ থেকে ফেরাতে না পেরেই মূলত রুম্পাকে চাপে ফেলে হত্যার পরিকল্পনা নেয় ইকবাল। আর এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সুহযোগিতা নেয় দুই সৎ ভাইসহ অারো একজনের।

পরিকল্পনা মোতাবেক ২২ মার্চ বুধবার রুম্পাকে দিয়ে আলাউলকে ফোনে ঢেকে এনে বায়োজিদ পশ্চিম শহীদনগর এলাকায় ভাড়া নেয়া নতুন বাসা দেখনোর কথা বলে জনৈক সৈয়দুল আলমের বাসায় নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে তারা পালিয়ে যায়।

বুধবার সকালে বায়োজিদ থানায় গ্রেফতারকৃতদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।

এসময় এক সংক্ষিপ্ত প্রেসব্রিফিং এ বায়োজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, গ্রেফতারকৃত রুম্পা ও তার স্বামী হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশকে বলেছে পূর্ব প্রেমের সুত্র ধরে আলাউল প্রায় তাকে ফোনে বিরক্ত করতো। এবং কু প্রস্তাব দিতো। দেখা করতে বলতো। এতে সে (রুম্পা) অতিষ্ঠ হয়ে উঠে এক পর্যায়ে স্বামী ইকবাল হোসেনকে এ কথা জানায়। ইকবাল এ পথ থেকে সরে যেতে আলাউলকে অনুরোধ করে। এতে কাজ না হলে সে একাধিকবার মোবাইলে আলাউলকে হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে একমাস আগে স্ত্রীর প্রেমিকা আলাউলকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ইকবাল তার সৎ ভাই হেলাল তৈয়ব ও মাসুদকে হাত করে। তাদের সাথে পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ২২ মার্চ বায়েজিদ থানার পশ্চিম শহীদনগর এলাকায় প্রবাসী সৈয়দুল আলমের চারতলা ভবনের ৩ তলায় একটি বাসা ভাড়া নেয়। এবং রুম্পাকে দিয়ে আলাউলকে ফোন করে সে বাসায় যেতে বলে। উক্ত বাসায় পূর্ব থেকে ইকবাল, হেলাল তৈয়ব ও মাসুদ লুকিয়ে ছিল।

.

রুম্পার ফোন পেয়ে ঘটনার দিন বিকালে আলাউল যখন ঐ বাসায় রুম্পার সাথে দেখা করতে যায়। তখনই বাসায় পূর্ব থেকে লুকিয়ে থাকা ইকবালসহ ৪ জন আলাউলের হাত-পা বেঁধে গলায় রশি পেছিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

ঘটনার পরদিন নিহত আলাউলের ঘনিষ্ট্য বন্ধুরা পাঠক ডট নিউজকে জানিয়েছিল, গৃহ শিক্ষক হিসেবে থাকাকালীন প্রতিবেশী ইয়াছমিন আকতার রুম্পার সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়াই আলাউল। দীর্ঘ ৫ বছর সম্পর্ক থাকাকালে কয়েক বছর পূর্বে হাটহাজারীর বড়দিঘীর পাড় এলাকার এক ছেলের সাথে রুম্পার হঠাৎ বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পরেও তাদের সম্পর্ক ছিল এবং রুম্পা বাপের বাড়িতে আসলে আলাউলের সাথে দেখা করতো।

আর এ দেখা দেখি এবং পরকিয়ার ব্যাপারটি এক পর্যায়ে রুম্পার স্বামী জেনে গেলে তাদের পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এবং তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়িও হয়ে যায় বলে আলাউলের এ বন্ধু জানায়।

এ ঘটনার আরো বেশ কিছুদিন পর রাউজানের এক ছেলে সাথে রুম্পার পূনরায় বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে রুম্পা এবং তার স্বামী বায়েজিদ থানার অক্সিজেন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো।

আলাউলের আগের ছবি এবং হত্যার পর মরদেহের ছবি।

বিগত ৫/৬ মাস আগে একদিন হঠাৎ আলাউলকে মোবাইলে ঝগড়া করতে দেখলে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে রুম্পার দ্বিতীয় স্বামী তাকে নাকি হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এরপর বিষয়টা মিটমাট করে দিলে সে আর রুম্পার সাথে যোগাযোগ রাখবে না বলে জানায়।

আলাউলেরর এসব বন্ধুরা প্রথম থেকেই ধারণা করেছিল পরকিয়া প্রেমের বিরোধের কারণেই রুম্পা ও তার স্বামী ইকবাল আলাউলকে খুন হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২২ মার্চ বুধবার রাত দুইটার দিকে বায়েজিদ থানার পশ্চিম শহীদনগর এলাকায় একটি চারতলা ভাড়া বাসার টয়লেট থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে বায়েজিদ থানার পুলিশ। প্রাথমিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এটিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানায়।

পরদিন লাশের ছবি দেখে আলাউলের বাবা ভাই তার লাশ সনাক্ত করে। এনিয়ে ২৩ মার্চ রাতে বায়োজিদ থানায় আজ্ঞাতনামাদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ে করে আলাউলের পিতা।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের নিয়ে পরদিন পাঠক ডট নিউজে সাবেক প্রেমিকা ও তার স্বামীর দিকেই সন্দেহের তীর!” শীর্ষক একটি অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। শেষ পর্যন্ত সে খবর সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

*বায়োজিদে অজ্ঞাত যুবককে হত্যার পর পালিয়ে গেছে সহযোগিরা

.

 

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print