
চট্টগ্রামে ডিবি পরিচয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত সাত দিন আগে ২৪ মার্চ নগরীর খুলশী থানাধীন আল ফালাহ গলির বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তাদেরকে তুলে নেয়া হয়।
তিনজন হলেন, পরিবহন ব্যবসায়ী এস এম শফিকুর রহমান এবং তার দুই শ্যালক মো.হাসান তারেক ও মোয়াজ্জেম হোসেন সাথী।
এ ঘটনার সাথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু সদস্য জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজদের পরিবার।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ী শফিকুরের স্ত্রী সোলতানা রাজিয়া টুম্পা বলেন এ অভিযোগ করেন।
পরিবহন ব্যবসায়ী এস এম শফিকুর রহমান দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি তার স্ত্রী টুম্পার।শফিকুর নগরীর সল্টগোলা ঈশান মিস্ত্রি হাট এলাকার এস এস ট্রান্সপোর্টের মালিক। তারেকের বায়েজিদ এলাকায় টিআর মোবাইল টেকনোলজি নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। তার ভাই মোয়াজ্জেম মধ্যপ্রাচ্য থেকে সদ্য দেশে এসেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ২৪ মার্চ দুপুরে ৬ জন লোক নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাদের বাসায় আসে। ঘরে ঢুকেই তারা তিনজনের আটটি মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপর একটি সাদা কাগজে দস্তখত করার জন্য আমার স্বামীর উপর চাপ প্রয়োগ করেন।
দস্তখত দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার স্বামী ও ভাই মোয়াজ্জেমকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তারেক মোটর সাইকেল নিয়ে মাইক্রোবাসের পেছনে পেছনে যেতে থাকলে পাঁচলাইশ থানার সামনে থেকে তাকেও মোটর সাইকেলসহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
তারেকের মা মিনা বেগম বলেন, আমাদের বাসায় ছোট একটি অনুষ্ঠান হচ্ছিল। হঠাৎ ছয়জন লোক বাসায় ঢুকে বলে, আমরা ঢাকা থেকে এসেছি। শফিককে একটু আমাদের সঙ্গে যেতে হবে। কোথায় নিয়ে যাবে জানতে চাইলে তারা বলেন, আগ্রাবাদে যেতে হবে। একজন লোককে চিনিয়ে দিয়ে ফিরে আসবে। আমি বললাম, ওকে কেন আপনারা নিয়ে যাবেন। তারা বলল, উনারাসহ (মো.হাসান তারেক ও মোয়াজ্জেম হোসেন সাথী) একসাথে চলেন।
তিনি জানান, শফিকুরের সঙ্গে মোজাম্মেলকেও বের করে মাইক্রোবাসে তোলা হয়। তিনি তাদের পেছন পেছন বের হয়ে দেখেন, মাইক্রোবাসটি ছিল সাদা রংয়ের। তবে নম্বরপ্লেট ছিল না। গাড়ির গ্লাসও ছিল সাদা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২৫ মার্চ খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ওইদিন রাতে শফিকুর তার মোবাইল থেকে স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাদের যারা তুলে নিয়ে এসেছে তারা নাকি সরকারের বিশেষ টিমের লোকজন। আমার এখানে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমাদের উপর অমানবিক ও পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আমাদের এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা কর।
শফিকুরের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী ও ভাইদের কোন অপরাধ থাকলে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় বিচার হোক। কিন্তু ছয়দিন ধরে তাদের থানায় সোপর্দ না করে যেভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে এটা কোন আইনে পড়ে। কোন চিহ্নিত অপরাধীকেও তো এভাবে গুম করে রেখে নির্যাতন চালানো যায় না। সংবাদ সম্মেলনে তারেকের স্ত্রী ফৌজিয়া আইনুন নাহার রুমিও উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে সিএমপি কমিশনারকে ফোন করে তাকে পাওয়া য়ায়নি। এছাড়া খুলশী থানার ওসির মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।