
বাংলাদেশে এখন ভারতের শীবসেনার শাসন চলছে উল্লেখ করে নির্ভিক সাংবাদিক ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন আমাদের যে টুকু স্বাধীনতা ছিল আজ সেটুই চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ ভারত সামরিক চুক্তির মধ্যমে আজ বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের সেনা প্রধান।
তিনি আজ ১ এপ্রিল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে “বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
পিপলস মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি নামে একটি সংগঠন এ সেমিনারের আয়োজন করেন।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, যে সংবিধানের দোহায় দিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আকঁড়ে আছে সে সে সংবিধান তিনি নিজেই পদে পদে লংঘন করছেন। আমি নিজেই তার দৃষ্টান্ত। তার দু:শাসনের ৭ বছরে আমি দুই দফায় ৫ বছর কারাভোগ করেছি।

আমরা যদি এমন জালিম সরকাররের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাই তাহলে আমাদের ঈমানকে মজবুত করতে হবে। মত্যু ভয় করা চলবে না।
তিনি বলেন, গুম খুন গুপ্ত হত্যাসহ ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে মৃত্যুর ভয় না করে জনগণকে রাস্তায় নামার আহবান জানিয়েছেন। কারণ ফ্যাসিবাদীর মোকাবেলা করতে না পারলে আজ নূরু গুম খুন হয়েছে কাল আপনি আমি যে কেউ এর শিকার হতে পারি।
মূল বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট রাষ্ট্রচিন্তক কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মাজহার। তিনি বলেন, অপরাধ ভিক্তিক আইন অনুযায়ী গুম, খুনের অধিকার রাষ্ট্রকে দেয়া হয়নি।
সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আবদাল আহমেদ, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, ইঞ্জিনিয়ার কে এম সুফিয়ান, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, রাজনীতিক আবু সুফিয়ান।
ইঞ্জিনিয়ার সেলিম জানে আলমের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক নসরুল কাদির, মহিলা নেত্রী মনোয়ারা বেগম মনি, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মিডিয়াকে আজ প্রেসনোট মিডিয়ায় পরিণত করা হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনে বাংলাদেশ আজ ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
চৌধুরী আলম, ইলিয়াছ আলী থেকে যে গুম ও গুপ্ত হত্যা শুরু হয়েছে তা দিন দিন বেড়েই চলছে। আমার ধারণা শেখ হাসিনার শাসনামলে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
কিন্তু এ ১০ হাজার মানুষ যদি একদিনে মারা যেতো তাহলে শেখ হাসিনার মসনদ সেদিনই ধসে পড়তো।
তিনি ফ্যাসিবাদী আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকে শুরু করার আহবান জানিয়ে বলেন, জনগণের শক্তির উপর আর কিছু নেই, তাই জাতীয়তাবাদী শক্তিকে জনগণের কাছে ফিরে এসে ফ্যাসিবাদী শক্তির পতন ঘটাতে হবে।
বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ নামের ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ উভয় মুসলমানদের অবদান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের হুমকির কথা উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা বিষয়ক যে সমঝোতা চুক্তি হতে যাচ্ছে তা দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। এটা হলের বাংলাদেশ পুরোদমে স্বাধীনতা হারাবে।
আলোচনায় ফরহাদ মাজহার বলেন, গুম খুনের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন হরতাল হয়নি। চট্টগ্রাম থেকে এ প্রথম হরতালের মাধ্যমে গুমের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলো।
তিনি বলেন, তিন মাসের শিশুকে জঙ্গী বলে আজ কেন হত্যা করা হচ্ছে ? আপনারা বাংলাদেশকে নিয়ে কি শুরু করেছেন ?
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ছাত্রদল নেতা নুরুকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যে নৃশংস্বভাবে হত্যা করা হয়েছে তদন্ত করে তা বের করার দায়িত্ব পুলিশের।
তিনি আরো বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যে হরতাল ডাকা হয়েছে তা শুধু নুরু হত্যার বিচারের জন্য নয়, এ হরতাল ফ্যাসিবাদ ও গুমের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তিনি জেল জুলুম মামলার ভয় না পেয়ে বাংলাদেশকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহবান জানান।