ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

হেফাজত কখনোই রাজনীতিতে জড়াবে না-আহমদ শফী

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

এক শ্রেণীর মিডিয়া ও ব্যক্তি বিশেষের কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক বিতর্ক তৈরি, মিথ্যা অপপ্রচার এবং অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামকে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচারের নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর পীরে কামেল শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

আজ (২৯ এপ্রিল) শনিবার রাতে সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কওমি মাদ্রাসার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ও দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও এবং আরবি) এর সমমান প্রদান করায় বাম সেক্যুলারপন্থী গোষ্ঠী ও ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়াসমূহের গায়ে যেন জ্বালা ধরে গেছে। তারা একদিকে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতির ছিদ্রান্বেষণে হাস্যকর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে সিলেবাস নিয়ে অমূলক প্রশ্ন তুলছে এবং কওমি সনদের মানদান নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে, অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামকে কওমি মাদ্রাসার সাথে একাকার করে বিদ্বেষমূলক নানা মিথ্যা কাহিনী ফেঁদে ঈমান-আক্বীদা ভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠনটিকে রাজনৈতিক রূপদানের ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি কোন কোন মিডিয়া ব্যক্তিগতভাবে আমার নামেও মিথ্যা গল্প তৈরী করছে। তিনি বলেন, স্কুল পাঠ্যবই, গ্রিক দেবি থেমিস ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসঙ্গে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে রুষ্ট হয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা থেকেই তারা এসব করছে।

হেফাজত আমীর বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেতে চাই, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় কখনো শিক্ষার্থীদেরকে অন্যের গোলামি করবার বা শ্রমের বাজারে সস্তা শ্রমিক হিসেবে নিজেকে বেচা-বিক্রি করবার শিক্ষা দেয় না। মাদ্রাসা শিক্ষার বিরোধীতা করতে গিয়ে এই ভোগবাদিরা ভুলে যায় যে, ধর্মশিক্ষা ও ধর্মচর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ইসলাম যেহেতু মানুষকে ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ বা সৃষ্টির সেরা জীব গণ্য করে এবং মানুষ আল্লাহর খলীফা হিসাবেই ইহলৌকিক জগতে হাজির। অতএব, প্রতিটি মানুষের এমন কিছু আধ্যাত্মিক গুণ রয়েছে, যার বিকাশ ঘটানোই শিক্ষার কাজ।

বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম প্রসঙ্গেও আল্লামা শাহ আহমদ শফী কথা বলেন। তিনি কয়েকটি গণমাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেফাজতে ইসলাম অংশ নিবে এবং নির্বাচন কমিশনে নাম নিবন্ধনের আবেদন করছে শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদকে  সর্বৈব মিথ্যাচার আখ্যা দিয়ে বলেন, দাওরায়ে হাদীসের সনদকে সরকারীভাবে মান দেওয়ার পর থেকে ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তি নতুনভাবে উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে নেমেছে। তাছাড়া কথায় কথায় ইসলাম বিরোধীতা এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা ও থেমিস প্রসঙ্গসহ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে বাম সেক্যুলারপন্থীদের ইসলাম বিদ্বেষ ও ভন্ডামির মুখোশ দিন দিন উন্মুক্ত হয়ে পড়াটাও আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে তাদের আক্রোশ বেড়ে যাওয়ার কারণ বলে আল্লামা শাহ আহমদ শফী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা বার বার স্পষ্ট করে বলে আসছি যে, হেফাজত সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ধর্মীয় ও আদর্শিক একটি সংগঠন। সিপাহী বিদ্রোহের (১৮৫৭) পর ঔপনিবেশিক আমল থেকেই গোলামির জিঞ্জির ভাঙবার যে লড়াই শুরু হয়েছে, মাদ্রাসা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। হেফাজতে ইসলাম ঈমান-আক্বীদা ও ইসলাম ধর্মীয় বিষয়সহ দেশাত্মবোধ ও জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। যেসব ব্যক্তি বিশেষ ও রাজনৈতিক দল ঈমান-আক্বীদা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজ গঠন এবং দেশের স্বার্থে কাজ করবে, তারা পরোক্ষভাবে হেফাজতের আন্দোলনের কারণে উপকৃত হবে। তবে হেফাজত কখনোই রাজনৈতিক কর্মকান্ড বা রাজনীতিতে জড়াবে না। ভোটের রাজনীতিতে প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে কাউকে সমর্থনও যোগাবে না। এরপরও কিছু মিডিয়া কর্তৃক হেফাজতকে রাজনৈতিক রূপদানের চেষ্টা বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা ছাড়া আর কী হতে পারে?

তিনি বলেন, আমি কয়েকটি পত্রিকায় দেখেছি, হেফাজতকে নতুনভাবে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট করে কাল্পনিক খবর তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে। দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিবেদনসমূহের শিরোনামের সাথে ভেতরের বর্ণনার কোন মিল নেই। ভেতরের বর্ণনার শুরু এক রকম, শেষ অন্য রকম। এক বাক্যের সাথে আরেক বাক্যের কোন মিল নেই। যে কোন সাধারণ মানুষ এসব সংবাদ প্রতিবেদন পড়লেই বুঝতে পারবেন যে, এগুলো উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ ছাড়া কিছু নয়। এসব খবরে হেফাজতের যেসব নেতার নাম উদ্ধৃত করা হয়েছে, আমি তাদের সাথে কথা বলে জেনেছি, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের বক্তব্যে পরিবর্তন এনে বিকৃত করা হয়েছে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, আমি আবারো স্পষ্ট করে বলছি হেফাজতে ইসলাম সাংগঠনিকভাবে কখনোই রাজনীতিতে জড়াবে না, ভোটের রাজনীতিতে কাউকে প্রত্যক্ষ্য-পরোক্ষ সমর্থন যোগাবে না। সুতরাং সংসদীয় নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া বা রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করার খবর সম্পূর্ণই উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার। দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে গণমাধ্যমের উচিত, হেফাজত সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের যে কোন বিষয়ে খবর প্রচারের আগে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সরাসরি বক্তব্য নিয়ে নিশ্চিত হওয়া এবং যেসকল নেতার বক্তব্য নেওয়া হয়, কোন পরিবর্তন না করে সেটাকে যথাযথভাবে প্রকাশ করা।

বিবৃতিতে হেফাজত আমীর নাম উল্লেখ না করে বলেন, কয়েকদিন আগে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় রেলওয়ের জায়গার সাথে আমাকে জড়িয়ে একটি নিন্দনীয় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। তিনি বলেন, দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার জায়গা সংকটের কারণে প্রশাসনিক সকল বিধি ও নিয়ম মেনেই হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আগে ২০০৯ সালে পার্শ্ববর্তী রেলওয়ের কিছু পরিত্যক্ত জায়গা মাদ্রাসার নামে বিধিসম্মত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে লিজ পেতে আবেদন করা হয়। প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হিসেবে আবেদনপত্রে আমার স্বাক্ষর থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু পত্রিকাটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার ভাবমূর্তি ও সুনামহানির অসৎ উদ্দেশ্যে রেলওয়ের জায়গা আমাকে দেওয়া হচ্ছে বলে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে। পত্রিকাটি এই সংবাদ তৈরির সময় আমার সাথে বা দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার কোন শিক্ষক-কর্মকর্তার সাথে কোনরূপ যোগাযোগ করেনি এবং বক্তব্য নেয়নি। তিনি বলেন, একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা মাদ্রাসা শিক্ষা ও উলামায়ে কেরামের প্রতি কতটা বিদ্বেষ পোষণ থেকে এমন মিথ্যা নিউজ প্রচার করতে পারে, এ থেকে তা সহজেই অনুমেয়।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, পত্রিকাটি ‘হেফাজত-বিএনপি গোপন যোগাযোগ বহাল’ এবং ‘গোপন আলোচনায় হেফাজতের ভিন্ন সুর’ শীর্ষক আরো দু’টি উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছে। পত্রিকাটির উলামা-মাশায়েখ, মাদ্রাসা শিক্ষা ও হেফাজত বিদ্বেষী ভূমিকার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে আল্লামা শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, জানা গেছে, শোনা গেছে, ধারণা করা যাচ্ছে, গোপন সূত্রে প্রকাশ উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ তৈরি কখনোই সৎ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নয়। তিনি বলেন, হেফাজতের কোন কার্যক্রমে গোপনীয়তা নেই। আমাদের সকল কার্যক্রম স্পষ্ট ও প্রকাশ্য। কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যেমন আমাদের বিশেষ কোন সখ্য নেই, তেমনি শত্রুতাও নেই। ঈমান-আক্বীদা এবং ধর্মীয় বিষয় ও জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে আমরা যে কারো সাথে কথা বলার অধিকার রাখি। এতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খোঁজার কোন সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ওলামায়ে কেরামের যে কোন ইতিবাচক অর্জনে ইসলাম বিদ্বেষী বাম সেক্যুলারপন্থীদের যেন গায়ে জ্বালা শুরু হয়ে যায়। তবে আশার কথা হচ্ছে, জনগণ এদের ভন্ডামী ভালভাবেই ধরে ফেলেছে এবং দিন দিন এদের মুখোশ খসে পড়ছে। চতুর্দিক থেকে ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তি আরো বেশি কোণঠাঁসা হয়ে পড়ছে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print